সারাদেশ

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে : মেয়র তাপস

ডেস্ক রিপোর্ট: সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তা কেটে পাইপ স্থাপনের অভিযোগ ওঠেছে সোনার মদিনা স্পিনিং মিলসের বিরুদ্ধে। এতে সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কটির গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ দেবে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

মিল কর্তৃপক্ষের দাবি, পাইপ স্থাপনে তারা সরকারি নীতি অনুসরণ করেছেন। এদিকে, কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের কুটিরচর এলাকায় সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কের রাস্তা কেটে নিচ দিয়ে সোনার মদিনা স্পিনিং মিলসের পাইপ স্থাপন করেছে। সরকারি ফি জমা দিয়ে বোরিং না করে রাস্তা কেটে পাইপ স্থাপন করা হয়েছে। অপরদিকে মিলের পাশে সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে মিলের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক ও খাল ভরাট করেছে মিল মালিকরা।

সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মালবাহী ট্রাক, বাস ও বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করে। কিন্তু বোরিং না করে রাস্তা কেটে পাইপ স্থাপন করা হয়েছে। এতে করে রাস্তাটি দেবে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী। সড়ক ও জনপথ বিভাগের উদাসীনতার কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দিনের পর দিন সরকারি জায়গা দখল ও রাস্তা কেটে পাইপ স্থাপন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তা কেটে সোনার মদিনা স্পিনিং মিলস পাইপ নিয়েছে। সেই পাইপ দিয়ে মিলের দূষিত বর্জ্য পানি নদীতে ফেলার চেষ্টা করছে প্রভাবশালী মিল মালিকেরা। এলাকাবাসী সে পাইপ স্থাপনে বাধা দিয়েছেন বলে জানান।

কুটিরচর গ্রামের বাসিন্দা সেফজুল হক, আব্দুল করিম, ফরিদ সেখ ও জমির মালিকসহ স্থানীয় ১৫-২০ জন অভিযোগ করে বলেন, সড়কটি কেটে মিলের পাইপ নিচ্ছে। আমরা তাদেরকে রাস্তা না কাটার জন্য বলেছিলাম। তবু তারা রাস্তা কেটে পাইপ নিয়েছে। এতে আমাদের বাড়ি-ঘর যেকোনো সময় দেবে যেতে পারে। এই কারণে মিলের মালিকরা আমাদের বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।

এলাকাবাসী আরও জানান, সোনার মদিনা স্পিনিং মিলসের দূষিত পানি ফুলজোড় নদীতে ফেলার জন্য এই পাইপ স্থাপন করার চেষ্টা করছে। এদিকে মিলের নোংরা ও পচা পানির দুর্গন্ধে আশপাশের পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

সোনার মদিনা স্পিনিং মিলসের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম সরকারি নিয়ম মেনেই পাইপ স্থাপন করা হয়েছে এবং এতে সড়কের কোন ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেন।

ভদ্রঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বলেন, এলাকাবাসী আমাকে ব্যাপারটি জানিয়েছে। আমি মিল মালিকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করব।

সোনার মদিনা স্পিনিং মিলসের পার্টনার আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, এই বিষয়ে আমার জানা নেই। আপনাকে মিলের পরিচালক পরে ফোন দেবে এই বলে মোবাইল কেটে দেন।

সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) কায়ছার আহমেদ সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পান। তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পরে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাস্তা কেটে পাইন স্থাপনের বিষয়ে অভিযোগের পর উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) কায়ছার আহমেদকে পরিদর্শনে পাঠানো হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পাইন স্থাপন না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জায়গা দখল করে টয়লেট নির্মাণের বিষয়টি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

সিরাজগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর গফুর বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে প্রচুর শিল্পকারখানা গড়ে উঠছে। এসব শিল্পকারখানার বর্জ্য এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) বা বর্জ্য শোধনাগারের মাধ্যমে পরিশোধিত করে সঠিক পাইপের মাধ্যমে নির্গমন করার কথা থাকলেও বেশির ভাগ কারখানা সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করেই অপরিশোধিত বর্জ্য অবারিতভাবে নদী, খাল, বিল ও কৃষিজমিতে ফেলছে।

সোনার মদিনা স্পিনিং মিলসের পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমোদন নাই বলে জানান তিনি।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *