খেলার খবর

কায়জারের জন্য কাঁদছে ফুটবল বিশ্ব

ডেস্ক রিপোর্ট: গত ৫ জানুয়ারি থেকেই যেন শুরু শোকের মিছিল! শনিবার চলে গেলেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি মারিও জাগালো। সেই শোক সামলে উঠার আগেই আরেক দুঃসংবাদ! সোমবার ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারও ওপারে পাড়ি জমালেন। কিংবদন্তি এই জার্মান ডিফেন্ডারের বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

‘ডার কায়জার’ নামে ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার সর্বকালের সেরাদেরও অন্যতম। বিশ্ব ফুটবলে মাত্র তিন জনের কীর্তি আছে খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার। তাদের মধ্যে একজন বেকেনবাওয়ার। ফুটবলার ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয় করা তিনজনের অন্য দুইজন ব্রাজিলের মারিও জাগালো এবং ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশম।

জাগালো আর বেকেনবাওয়ার দুদিনের ব্যবধানে মারা গেলেন। মারিও জাগালো ছিলেন খেলোয়াড় আর কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা প্রথম ব্যক্তি, এরপর এই কীর্তি গড়েন বেকেনবাওয়ার।

বেকেনবাওয়াকে ডাকা হতো ডার কায়জার নামে, যার অর্থ সম্রাট। সত্যিকার অর্থেই জার্মানির ফুটবলের সম্রাটই ছিলেন তিনি।

তার চলে যাওয়ায় কাঁদছে ফুটবল বিশ্ব। জার্মানিতেও শোকের ছায়া। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বলেন, ‘আমরা তাকে মিস করব। জার্মান ফুটবলের ইতিহাসের সেরাদের একজন ছিলেন তিনি। অনেকগুলো প্রজন্মকে অনুপ্রেরণাও দিয়ে গেছেন তিনি।’

বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান ফুটবলার লোথার ম্যাথাউস কাঁদছেন। বললেন, ‘আমরা তাকে মিস করব। যদিও আমি আগে থেকেই জানতাম ফ্রাঞ্জ ভালো নেই তবু এ ধাক্কা অনেক গভীর, সওয়ার মতো নয়। জার্মানি তো বটেই, ফুটবল বিশ্বের জন্যই এটা অনেক বড় একটা ধাক্কা। তিনি খেলোয়াড়, কোচ হিসেবে, মাঠে, মাঠের বাইরে ছিলেন সেরাদের অন্যতম।’

কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান পেলের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখা হয়েছে, ‘তারা বন্ধুর চেয়েও বেশি কিছু ছিলেন। রাজা পেলে বেকেনবাওয়ারকে তার ভাই বলে ডাকতেন। নিউ ইয়র্ক কসমোসে একসঙ্গে খেলতেন। এই দুই কিংবদন্তি সেখানে সুন্দর, বিরল এক বন্দুত্ব স্থাপন করেন যা পুরো জীবন জুড়েই সামলেছেন তারা। ফুটবলের প্রতি এমন ভালোবাসা যার, তেমন একজনকে বিদায় বলাটা বেশ কঠিন। যাই হোক, আমরা আশা করি, তারা আবার স্বর্গে মিলিত হবেন। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ বেকেনবাওয়ার।’

শোক জানালেন লিওনেল মেসিও। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্টোরি প্রকাশ করেছেন লিখেছেন, ‘শান্তিতে বিশ্রাম নিন’।

ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো শোক বার্তায় বলেন, ‘জার্মান ও বিশ্ব ফুটবলের একজন কিংবদন্তি, বেকেনবাওয়ারের অর্জন ও সাফল্য খোদাই হয়ে থাকবে ইতিহাসে। তুমুল জনপ্রিয়তার পরও ‘ডের কাইজার’ সবসময়ই বিনয়ী ও সাদাসিধে ছিলেন।’

অস্ট্রিয়ার শহর সালজবুর্গে ঘুমের মধ্যেই শান্তিতে মৃত্যুবরণ করেন ৭৮ বছর বয়সী বেকেনবাওয়ার। যুদ্ধপরবর্তী জার্মানির ফুটবলে বড় এক আইকন হয়েই ছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ, ইউরো, ইউরোপিয়ান কাপ (বর্তমান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) জিতেছেন খেলোয়াড়ি জীবনে। পশ্চিম জার্মানির হয়ে ১৯৭৪ সালে অধিনায়ক হিসেবে এবং ১৯৯০ সালে কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতেন তিনি। জার্মানির ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ১৯৭০ এর দশকে হ্যাটট্রিক ইউরোপিয়ান কাপও জিতেছিলেন বেকেনবাওয়ার।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *