সারাদেশ

বিবেকানন্দের আদর্শে দেশসেবার ব্রত গ্রহণের আহ্বান বিশিষ্টজনদের

ডেস্ক রিপোর্ট: অবিভক্ত ভারতের নবজাগরণের অগ্রদূত স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন ও ভারতের জাতীয় যুব দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালন করেছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারে এ আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে অতিথিরা বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে স্বামী বিবেকানন্দের মহান আদর্শে জীবন গঠন ও দেশসেবার ব্রত গ্রহণ করার আহ্বান জানান।

ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী আমরা যৌথ উদযাপন করছি কারণ এটি আমাদের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারের অংশ। তিনি ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক প্রতিভাবান ও অকুতোভয় মানবতাবাদী তিনি বিশ্বাস করতেন যে তারুণ্যের শক্তিই একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠন করতে পারে।

‘তিনি শিক্ষা দিয়েছেন নিজের আত্মবিশ্বাসের উপর গুরুত্বারোপ করতে, নিঃস্বার্থ সেবা এবং ব্যক্তিগত এবং সামাজিক পরিবর্তনের জন্য জ্ঞানের অন্বেষণ করার প্রতি জোর দিয়েছেন’-বলেন ভারতীয় হাই কমিশনার।

অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড.আতিউর রহমান বলেন, ‘স্বামী বিবেকানন্দ তরুণদের ভয়কে জয় করার কথা বলেছেন। একই সঙ্গে যারা প্রান্তের মানুষ তাদের দিকে তাকাতে বলেছেন।’

খ্যাতিমান এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণদের এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তারা গুণমানের শিক্ষা পাচ্ছে না। আমরা যে শিক্ষাটি দিচ্ছি সে শিক্ষাটি তাদের খুব বেশি কাজে লাগছে না। সম্প্রতি ৫ হাজার ৬শ তরুণদের উপর একটি জরিপ হয়েছে ১৬ থেকে ২৮ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের উপর সে জরিপে তারা জানাচ্ছেন, যে শিক্ষা আমরা পাই সে শিক্ষা দিয়ে কোথাও কাজ পায় না কারণ এই শিক্ষাটি কাজ করার মতো না।’

অনুষ্ঠানের আলোচক ইতিহাস গবেষক ও বার্তা২৪.কম’র পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম যুব জাগরণে স্বামী বিবেকানন্দের দর্শনের কথা তুলে ধরে বলন, ‘তার মহান বাণী ও দর্শন অনুপ্রেরণা হয়ে পরাধীন ভারতে স্ফুলিঙ্গ হয়ে অজস্র স্বাধীনতা সংগ্রামের সৃষ্টি করেছিল।’

স্বামী বিবেকানন্দ আত্মসমালোচনায় অকপট ছিলেন উল্লেখ করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভারত অমর ভারত’ গ্রন্থে স্বামীজি নিজেই বলছেন আমার মনে হয় দেশের জনগণকে অবহেলা করায় প্রবল জাতীয় পাপ এবং এটাই আমাদের অবনতির অন্যতম কারণ। ভারতের সকল দুর্দশার মূল জনগণের দারিদ্র্য। ভারতের পুরোহিত শক্তি ও পরাধীনতা শত শত বছর ধরে নিষ্পেষিত করেছে। অবশেষে তারা ভুলে গেছে তারাও মানুষ।’

ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক মৃন্ময় চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম দিবসে তার বর্ণাঢ্য জীবন ও মানব সেবা নিয়ে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন কুমার দেব ও ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের প্রতিনিধি স্বামী দেবধ্যানন্দ মহারাজ।

আলোচনা শেষে স্বামী বিবেকানন্দের প্রিয় গান পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী আনুষ্কা চক্রবর্তী।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *