‘মিয়ানমার বিষয়ে বাংলাদেশের দ্বিমুখী কূটনীতি গ্রহণ করা উচিত’
ডেস্ক রিপোর্ট: মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী একটি শহর দখলে নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির জাতিগত এক সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী পালেতোয়ার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
এক বছর পূর্বে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির এক মুখপাত্র রাইখান রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি সংহতি জানিয়েছিল। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সীমান্তবর্তী বন্দর শহর দখলে নেওয়ায় প্রতিবেশী বাংলাদেশের জন্য নতুন কোনো নিরাপত্তা উদ্বেগ সৃষ্টি করছে কি-না কিংবা বাংলাদেশেরই বা এখন কি ধরনের ভূমিকা থাকা উচিত-এবিষয়ে বার্তা২৪.কম এর সঙ্গে কথা বলেছেন নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুর রশীদ। কথা বলেছেন পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম।
বার্তা২৪.কম: বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে মিয়ানমারের সীমান্ত শহর পালেতোয়ার নিয়ন্ত্রণ আসায় বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক বা নেতিবাচক কি তাৎপর্য বহন করছে?
মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুর রশীদ: একটি জিনিস বুঝতে হবে যে যখন কোন দেশের অখণ্ডতা যখন বিপদে পড়ে তখন স্বভাবতই তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে শঙ্কা ছড়ায়। এখানে কি অবস্থা হবে রাখাইনের একটি সীমান্ত শহর আরাকান আর্মির হাতে চলে যাওয়ার ফলে তা নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করতে হবে। বাংলাদেশে যেহেতু রোহিঙ্গা সমস্যা আছে, তাই আমাদের একটি দ্বিমুখী কূটনীতি গ্রহণ করা উচিত। একদিকে আরাকান আর্মির সঙ্গে প্রকাশ্যে বা গোপনে হোক সংযোগ তৈরি করা উচিত। আর স্বভাবতই মিয়ানমারের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে তো আমাদের কূটনীতি আছেই। এটি এ কারণে যে আরাকান আর্মির রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একটি পলিসি ছিল। তারা মনে করে এরা (রোহিঙ্গারা) তাদের মানুষ। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে কোনো আপত্তি নেই। রাখাইনের পরিস্থিতি যা দেখা যাচ্ছে তাতে মিয়ানমারে জান্তা সরকার কতদিন টিকবে তা নিয়েও শঙ্কা আছে। যখন কোন সরকার না টিকে বা টিকে না থাকার আশঙ্কা দেখা দেয় তখন দ্বিমুখী কূটনীতি অনুসরণ করতে হয়। যারাই সেখানে ক্ষমতায় আসুক বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত, যাতে করে দ্রুত রোহিঙ্গা সমস্যাসহ সীমান্তে আরও যা অমিমাংসিত ইস্যু আছে তা যেন সমাধান করা যায়। আমি মনে করি আমাদের শঙ্কার কারণ নাই তবে নিশ্চয়ই অনেক সক্রিয় হতে হবে।
বার্তা২৪.কম: চীনের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিসর বাড়ছে, চীন কি এক্ষেত্রে কোন ভূমিকা রাখতে পারে?
মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুর রশীদ: আমরা তো দেখছি গত ৫/৬ বছর ধরে তারা তো কোন ভূমিকা রাখলো না। চেষ্টা করেছে, চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কোন দেশের ভূমিকার উপর ভিত্তি করে আমাদের পদক্ষেপ তৈরি হওয়া উচিত নয়। আমরা চাইব যে সবাই আমাদের সমস্যা সমাধান করার জন্য এগিয়ে আসুক।
বার্তা২৪.কম: আরাকান আর্মির উত্থান আমাদের জন্য কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে কিনা?
মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুর রশীদ: আমি মনে করি যে সেখানে (রাখাইনে) পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা আমাদের জন্য কোন নিরাপত্তার শঙ্কা তৈরি হয় নি।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।