সারাদেশ

শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন যে কারণে সংঘর্ষে রূপ নিল

ডেস্ক রিপোর্ট: শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন যে কারণে সংঘর্ষে রূপ নিল

ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজধানীর মিরপুর ১১ এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনে বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। যার কারণে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে বলে অভিযোগ আন্দোলনরত শ্রমিকদের।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে মিরপুর ১১ এলাকার শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেন।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেকো রেডওর্ডস, ডেকো এপারেলস, ইপিলন, ডেকো নীড, কংকড, ইভেন্টস গ্রুপ, টিউলিপ, আলানা গ্রুপ, আজমত গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন করছেন।

তারা বলেন, একজন শ্রমিক যদি ৮ হাজার টাকা বেতন পায়। তার পরিবারে যদি ৫ জন সদস্য থাকে। বাসা ভাড়াই তো যায় ৫ হাজার টাকা। বাকি টাকায় কিভাবে সংসার চলবে। বাজার দরের যে অবস্থা। তাতে তো দু বেলা ভাত খাওয়ার অবস্থা নেই। আমরা কিভাবে বাঁচবো। কয়েক টাকা বেতন বাড়ানোর দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। কিন্ত এখন জীবন নিয়ে টানাটানি।

এদিকে শ্রমিকদের আন্দোলনে মালিকপক্ষ স্থানীয় রাজনৈতিক লোকজনদের দিয়ে ওপর হামলা করিয়েছে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের।

শ্রমিকরা বলছেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা নিজ নিজ কারখানার সামনে আন্দোলন করছিলেন। পরবর্তীতে কয়েকজন বহিরাগত এসে হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। এই খবরে তারা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। শুরু হয় ধাওয়া-পালটা ধাওয়া। আহত শ্রমিকদের মিরপুর ১১ এর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গার্মেন্টস কর্মী জরিনা বেগম বলেন, আমরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে শুরু করি। পাঁচ বছর ধরে আমাদের বেতন বাড়ে নাই। এখন বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছি। এর মধ্যে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পির লোকজন এসে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর হামলা করে।

কালিয়াকৈরে পোশাক কারখানাসহ ৪ স্থানে আগুন

ছবি: বার্তা২৪.কম

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার একটি তৈরি পোশাক কারখানাসহ পৃথক ৪টি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকে শ্রমিক আন্দোলনে ফের উত্তাল হয়ে ওঠে উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সফিপুর, পল্লী বিদ্যুৎ ও চন্দ্র এলাকা। এসময় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা যানবাহন, হাসপাতাল, দোকানপাট ভাঙচুর করে বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়।

এদিকে সকাল ১১ টার দিকে পৌরসভার সফিপুর বোর্ডমিল এলাকায় লিডার টেক্সটাইল নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় সকালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসময় স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে রওনা দিলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দীর্ঘসময় অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে কারখানাটিতে অগ্নিকাণ্ডের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এর আগে উপজেলা সফিপুর এলাকায় তানহা হেলথকেয়ার নামে একটি হাসপাতলে ব্যাপক ভাঙচুর করে। পরে পাশে থাকা একটি পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন। এছাড়াও উপজেলার চন্দ্র এলাকায় ওয়ালটন কারখানার সামনে ওয়ালটনের একটি প্লাজায় শ্রমিকরা হামলা চালায়। এক পর্যায়ে ওই প্লাজাসহ বাহিরে দাঁড়ানো একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর দুটি ইউনিট পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।

কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন রায়হান চৌধুরী জানান, সফিপুর এলাকায় লিডার গার্মেন্টসে আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ওই পথে রওনা দেন। কিন্তু শ্রমিকরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি অবরোধ করে রেখেছিল। পরবর্তীতে সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।

;

অবরোধ সমর্থনে স্লোগানে মুখর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ

ছবি: বার্তা২৪.কম

বিএনপির ও সকল সমমনা রাজনৈতিক জোটের ৩ দিনের অবরোধের সমর্থনে মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

মঙ্গলবার ( ৩১ অক্টোবর) দুপুর ১ টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সামনে জড়ো হয়ে মিছিলের পর সমাবেশ করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।

এসময় সরকার বিরোধী নানা স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ। দ্রুত নেতা কর্মীদের মুক্তি ও সকল।মিথ্যা মামলা  প্রত্যাহারের দাবী জানান তারা। সেই সাথে দ্রুত সরকারকে পদত্যাগের দাবী জানান আইনজীবীরা।

সমাবেশে  জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার এ. জে মোহাম্মদ আলীম, মহা সচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

আলুর সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকরে ডিসিদের নির্দেশ

ছবি: বার্তা২৪.কম

হিমাগারের আলু বুধবার থেকে সরকার নির্ধারিত দাম (২৬-২৭ টাকা) কার্যকর করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর হিমাগার পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর বিক্রয়মূল্য ২৬ থেকে ২৭ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মূল্যে কোল্ড স্টোরেজ ও খুচরা কোনো পর্যায়েই আলু বিক্রি করা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার (৩০ অক্টোবর) আলু আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।

এদিকে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে কোল্ড স্টোরেজ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সব জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, আড়ত থেকে তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে এ দামে বিক্রি করছে।

;

হরতাল-অবরোধে কপাল পুড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের

ছবি: বার্তা ২৪

মো. সেলিম, পরিবারের ৫ সদস্যের খরচ চালাতে রিকশা চালান রাজধানী ঢাকার পল্টন এলাকায় ৷ দিনে কমপক্ষে ৭০০ টাকা আয় করতে হয় তাকে। কিন্তু ৩১ অক্টোবর সকালে হতাশা ভরা মুখ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন সেলিম। বিএনপি জামায়াতের কঠোর অবরোধের কারণে রাস্তায় বের হয়নি তেমন মানুষ। এতেই বিপাকে পড়েছেন তিনি।

শুধু সেলিম নয়, হরতাল অবরোধে এমন হতাশার গল্প রাজধানীর প্রায় সকল রিকশা চালকসহ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের। রাজনৈতিক সংকটে হরতাল অবরোধে দলীয় ফায়দা হলেও  কপাল পুড়ছে অসহায় মানুষদের।

এদিকে বিএনপি জামায়াতের অবরোধে যানচলাচল স্বাভাবিক থাকলেও পর্যাপ্ত যানবাহন নেই রাজধানীর রাস্তায়। বিক্রি নেই ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের। অবরোধের কারণে রাস্তায় যানবাহন কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন হকাররাও। দ্রুত রাজনৈতিক সংকট নিরসন করার দাবী খেটে খাওয়া মানুষের।

মো. সেলিম বলেন, বাড়িতে ৫ জন মানুষ, একদিনে ৭০০ টাকার নিচে ইনকাম করলে আমাদের খাওয়া হয়না। তার উপর এমন অবরোধ, ভয়ে মানুষ বের হচ্ছে না। রিকশায় কে উঠবে। খুব কষ্টে আছি আমরা।

ফুটপাতের ফল ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন বলেন, মানুষজন তো রাস্তায় নাই। বাইরে থেকে আজ গাড়ি আসেনি। ভির নাই আমাদের বিক্রিও নাই। সকাল থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হয় নাই। কি করব কন, আমাদের কথা কেউ ভাবে না ।

ছবি: বার্তা ২৪ ঝালমুড়ি ব্যবসায়ী আকরাম বলেন, দেখেন বস্তা আনছি পুরাটাই আছে। লোকজন নাই অবরোধে, খাবে কে? এভাবে তো সরকার ও আমাদের কথা ভাবে না অন্য দল ও ভাবেনা। গরিবের কপাল ১২ মাসই পোড়া। 

গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ঘিরে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতা কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক নিহত হয়। বিএনপি নেতা কর্মী নিহত হওয়ার অভিযোগ ও রয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মীকে ৷

মহাসমাবেশে হামলা ও নেতা কর্মীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে গত ২৯ অক্টোবর সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিএনপি । এরপর আবারও ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত দিনের কঠোর অবরোধের ঘোষণা দেয় দলটি। 

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *