সারাদেশ

ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন: প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসেব দিতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে

ডেস্ক রিপোর্ট: সম্প্রতি সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হওয়ার আশায় আঞ্জুমান আরা বেগম নামের সরকারি কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক ৬২ লাখ টাকা খুইয়েছেন।ভুক্তভোগীর এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ইয়াসির আরাফাত (৩০) ও মো. আনিস নামের দুই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ডিবি।

সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু পরিচয়ে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন ও চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিল ইয়াসির আরাফাত (৩০) ও মো. আনিস। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, আগেও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত এপিএস-২ হাফিজুর রহমান লিকুর পরিচয় প্রদান করে বিভিন্ন জায়গায় মনোনয়ন বাণিজ্য, চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে আমরা কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছি। আবার নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত এপিএস-২ পরিচয়ে প্রতারণা করা ভুয়া এ লিকুকে আমরা গ্রেফতার করেছি। সে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে।

জানা গেছে, গ্রেফতার ইয়াসির আরাফাত ও মো. আনিস প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর পরিচয় প্রদান করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও সরকারি অন্যান্য নিয়োগকারীর কর্তৃপক্ষকে ফোন করে তার মনোনীত ব্যক্তিদের চাকরি দেওয়ার জন্য তদবির করাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ফোন করে চিকিংসা ফ্রি কমানো ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের রোগী দেখার সিরিয়াল দেওয়ার কাজ করে আসছিলেন। এভাবে তারা হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

দুই প্রতারক ভুক্তভোগী এক মনোনয়নপ্রত্যাশীর অভিযোগ তুলে ধরে ডিবি প্রধান বলেন, আঞ্জুমান আরা বেগম একটি সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তিনি স্থানীয় রাজনীতি করেন। তার খায়েস তিনি মহিলা কোটায় এমপি হবেন। সেজন্য তিনি আনিস নামে একজন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি (আনিস) বলেন, আপা আপনার সঙ্গে কি লিকুর কোনো যোগাযোগ বা মেসেজ আসে নাই? হ্যা মেসেজ তো আসছে। তাতে লেখা ছিল-দ্রুতই নিয়োগ দেওয়া শেষ হয়ে যাবে। দ্রুত ৬২ লাখ টাকা পাঠান। প্রথমে ১২ লাখ টাকা দিতে হবে উন্নয়ন ফান্ডে। বাকি টাকা দিতে হবে একাউন্টে।

আনিস তখন বলেন, ভাই তো টাকা দিতে বলেছে, টাকা দেন। সুমন ও আনিসকে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে মোট ৬২ লাখ টাকা পাঠান তিনি। এরপর ওই নম্বরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু পরিচয় দিয়ে এই প্রতারণার কাজটি করে আসছিলেন। তাদের বক্তব্যে আরও কিছু ভুয়া লিকু রয়েছে। যারা দাফতরিক তদবির করেন।

৬২ লাখ টাকা দিয়ে নারী সংরক্ষিত আসনে এমপি হতে চান। এই ভুক্তভোগী আসলে এমপি হয়ে কি করতেন? আপনারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কি-না? জানতে চাইলে হারুন বলেন, যেভাবে ম্যাসেজটা আসছে, সেটা তো বিশ্বাস করার মতোই ছিল। তাছাড়া আনিস ও সুমন কথায়, মেসেজ ভ্যারিফাই করার সুযোগই পাননি।

হারুন বলেন, এর আগেও লিকুর নাম ব্যবহার করে একটা জেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এক কোটি টাকা দিয়েছেন দলীয় মনোনয়ন পাবার কথা বলে। আমরা সে প্রতারককেও গ্রেফতার করেছি।

একদিনের মধ্যে ওই নারী ৬২ লাখ টাকা তিনি কোথায় পেলেন? জানতে চাইলে হারুন বলেন, সেটা তো তার ব্যাপার। ভাই ছেলে মেয়ে আত্মীয়-স্বজন তো আছেই। নানাভাবেই তো এ টাকা ম্যানেজ করতে পারেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *