সারাদেশ

তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে মাতলো জয় বাংলা কনসার্ট

ডেস্ক রিপোর্ট: তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে মাতলো জয় বাংলা কনসার্ট

ছবি: বার্তা২৪.কম

সন্ধ্যা নামতে নামতে ভরে যায় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের চারপাশ। লালনের গানে গানে আরও হাজারো লাইটের আলোর ঝলকানিতে অন্য এক রূপ পায় চট্টগ্রামের জয় বাংলা কনসার্ট প্রাঙ্গণ। ব্যান্ড আর গিটারের ছন্দে যেন তারুণ্যের জোয়ার এসেছে মাঠজুড়ে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ স্মরণে প্রথমবারের মতো বন্দর নগরী চট্টগ্রামে আয়োজিত হয় জয় বাংলা কনসার্ট। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বেলা তিনটায় শুরু হওয়া এই কনসার্ট বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জনসমুদ্রে পরিণত হয়। তরুণদের সঙ্গে এই কনসার্ট উপভোগের জন্য চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

মাঠের ভেতর কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ায় মাঠের বাইরেও এই কনসার্ট উপভোগ করেছে লাখ লাখ মানুষ। চট্টগ্রামবাসীদের দাবি, প্রতিবছরই যেন চট্টগ্রামে এই কনসার্টের আয়োজন করা হয়।

সিটি কলেজের শিক্ষার্থী স্নিগ্ধা এসেছেন ওয়াফেসের গান শুনতে। তিনি বলেন, প্রথম এই কনসার্টে আসা। প্রথমদিনই অনলাইলে ফ্রিতে রেজিস্টেশন করেছি। প্রিয় শিল্পীদের কাছ থেকে দেখব, অনুভূতি বলার বাইরে।

একইভাবে লালন পাগল রাফা উদ্দিন বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন নগরীর চকবাজার থেকে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ব্যান্ড ভক্তদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। সেরা ৯টি ব্যান্ড সবাই আমাদের পরিচিত। আজকের কনসার্ট হচ্ছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ঘিরে। আমরা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কখনো ভুলব না।

এর আগে, বেলা ৩টার দিকে জয় বাংলা কনসার্ট শুরু হয়। পরে মঞ্চে ওঠে চট্টগ্রামের ব্যান্ড দল তীরন্দাজ। প্রায় ২৫ মিনিট ধরে তারা জনপ্রিয় একেকটি গান পরিবেশন করতে থাকে। তাদের পরে বেলা পৌনে ৪টার দিকে মঞ্চে ওঠে ব্যান্ড কার্নিভাল। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে তারা জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে। বেলা ৪টার দিকে মঞ্চে উঠে ৩০ মিনিট ধরে ভিন্ন ধারার সুরের গান পরিবেশন করে মেঘদল। তাদের একেকটি গানে কখনও উচ্ছ্বাস, কখনও বেদনার সাগরে ভাসেন দর্শক শ্রোতারা। বেলা ৫টা ২০ মিনিটে মঞ্চে আসে ব্যান্ড দল অ্যাভোয়েড রাফা। সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে মঞ্চে আসে লালন ব্যান্ড। আধুনিক ছোঁয়ায় লালনের একেকটি জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন তারা। সঙ্গে তাল মেলায় বন্দর নগরীর দর্শক শ্রোতারাও। সন্ধ্যা ৭টা ৪০ এর দিকে মঞ্চে আসে ব্যান্ড ক্রিপটিক ফেইট। জনপ্রিয় নানা পরিবেশনায় উৎসবে মাতে দর্শক শ্রোতারা। রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের দিকে মঞ্চে আসে ব্যান্ড নেমেসিস। নিজেদের জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে তারা। রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে চিরকুট আসে মঞ্চে। তাদের পরিবেশনা যেন পুরো ভেন্যু জুড়ে ছড়িয়ে দেয় উঞ্চ ঢেউ। আর সর্বশেষে মঞ্চ মাতায় আর্টসেল।

আগে সাতবার ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এই কনসার্ট আয়োজন হলেও এবারই প্রথম ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে এই কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। বর্তমান প্রজন্মকে দেশের ঐতিহাসিক এই দিনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) তারুণ্যের প্ল্যাটফর্ম ইয়াং বাংলার নিয়মিত আয়োজন জয় বাংলা কনসার্ট। আওয়ামী লীগের ওয়েব টিমের সমন্বয়ক তন্ময় আহমেদ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টে গেলো বছর জানিয়েছিলেন কিভাবে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক জয় বাংলা কনসার্টের আইডিয়া প্রদান করেছিলেন এবং ধীরে ধীরে আজ তা কিভাবে দেশের সবচাইতে বড় ও আকর্ষণীয় কনসার্ট হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

ইয়াং বাংলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, রেজিস্ট্রেশনের আগে থেকেই তরুণেরা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কনসার্টটির জন্য। রেজিস্ট্রেশন শুরুর পর আধা ঘণ্টা আগে দৈনিক রেজিস্ট্রেশনের কোটা শেষ হয়ে যাচ্ছিল। কনসার্ট উপলক্ষে ইয়াং বাংলা ও সিআরআইয়ের পেজ থেকে শেয়ার করা বিভিন্ন ব্যান্ড দলের বক্তব্য, প্রোমো ও পোস্টার প্রকাশ করার পর থেকেই তা শেয়ার করে কনসার্টে উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন ভক্তরা।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিবারের মতো এবারও জয় বাংলা কনসার্টে নারীদের জন্য বিশেষ একটি প্রবেশপথের ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে যেন তরুণেরা কনসার্টটি নিরাপদভাবে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

কনসার্টের আগের দিন বুধবার প্রস্তুত করা হয় স্টেজ। এরপর শিল্পীরা বিভিন্ন গানের সঙ্গে মূল কনসার্টের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এ সময় গানের সঙ্গে সঙ্গে আলোর ঝলকানিতে চোখ ধাঁধিয়ে যায় স্টেডিয়ামে। সেই সঙ্গে গিটার ও ড্রামের শব্দে কেঁপে ওঠে স্টেডিয়াম।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শত ভাষণের একটি। আর একাত্তরে মুক্তিকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।

সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের পাশাপাশি কনসার্টে আরও উপস্থিত ছিলেন সিআরআই ট্রাস্টি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এবং ডাক-টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা।

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নারীসমাজ এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের নারীসমাজ এগিয়ে যাবে প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গৃহকর্মে নারীর শ্রম ও অবদানকে জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার (৮ মার্চ) ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। দিবসটি উপলক্ষে তিনি বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ; এগিয়ে নিতে হবে বিনিয়োগ’ যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে প্রতিটি কাজে নারী-পুরুষের সম-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নারী-পুরুষ সমতা অর্জন ও নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিনিয়োগ এবং জেন্ডার-রেসপনসিভ অর্থায়নকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য এবং ২০৪১ সালের উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিভিন্ন উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ ও নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শুধুমাত্র চাকরি নির্ভর না হয়ে প্রতিটি নারী যেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে এ লক্ষ্যে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমসহ তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গৃহকর্মে নারীর শ্রম ও অবদানকে জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

নারী আন্দোলনের ইতিহাসে দিবসটি এক গৌরবময় দিন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ কর্মঘন্টা আর মজুরি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নারী আদায় করেছিল তার অধিকার। নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সকল অগ্রগতি এবং উন্নয়নে করেছে সমঅংশীদারীত্ব।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের পুনর্বাসন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ‘নারী পুনর্বাসন বোর্ড’ গঠন করেন। তিনি জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর সমানাধিকারের বিষয়টি সংবিধানে নিশ্চিত করেন।

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই শিশুর অকাল মৃত্যুরোধ, খর্বকায় শিশুর সংখ্যা হ্রাস করে শিশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, মনোসামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ সাধনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুর কল্যাণ ও কর্মজীবী নারীদের সুবিধার্থে তৈরি হয়েছে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র। বাল্যবিবাহ, যৌতুক, মাদকসহ নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপন করা হয়েছে কিশোর-কিশোরী ক্লাব। জিসিএ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের উপকূলীয় এলাকায় নারীর জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু বিকল্প জীবিকা এবং সুপেয় পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের হাতের মুঠোয় এনে দেওয়ার জন্য কাজ করছে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প। এ সবই সম্ভব হচ্ছে সরকারের নারী বিনিয়োগবান্ধব নীতি ও নারীবান্ধব বাজেট প্রণয়নের কারণে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে আমাদের নারীসমাজ প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, দেশের নারী-পুরুষ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবো, ইনশাআল্লাহ ’৷

প্রধানমন্ত্রী ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

;

চট্টগ্রামে এক রাতে তিন জায়গায় আগুন

ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রাম নগরীতে মালবাহী রেলের দুইটি পরিত্যক্ত বগিতে ও ময়লার স্তূপে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাত ১১টার কিছু আগে সদরঘাট থানার এসআরবি রেল স্টেশনে রাখা দুটি বগিতে আগুন লাগে। এর আধাঘণ্টা পর নগরীর আগ্রাবাদের সিডিএ এলাকায় ময়লার স্তূপে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

রাত পৌনে ১২টার দিকে বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপসহকারী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, বারেক বিল্ডিং মোড়ে দুইটি মালবাহী পরিত্যক্ত রেলের বগিতে আগুনের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে দুটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে ময়লার স্তূপে আগুনের খবর পেয়ে আগ্রাবাদ থেকে দুটি ইউনিট যায়। আগুন কিভাবে লেগেছে সেটা জানা যায়নি।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাত আটটায় নগরের ওয়াসা এলাকায় জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ সংলগ্ন ম্যাক্স কনস্ট্রাকশনের সাইটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নির্বাপণ করেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এম ডি আবদুল মালেক।

তিনি জানান, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের মাঠে ম্যাক্স কনস্ট্রাকশনের সাইটে রাত সাড়ে সাতটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। রাত আটটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নির্বাপণের কাজ শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

;

নরসিংদীর এক সংগ্রামী নারী আনোয়ারা খানম ডলি

ছবি: বার্তা২৪.কম

আজ জাতীয় নারী দিবস। এদেশে অনেক নারী রয়েছেন যারা স্ব-মহিমায় আত্মকর্মী হয়ে বীরত্বের পরিচয় দিয়ে সমাজের চোখে হয়েছেন সংগ্রামী নারী। তাদের খবর আমরা কজনইবা রাখি। তারা পায়না কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, আর না পেলেও হাল ছাড়েন না তারা। এরকমই একজন সংগ্রামী নারী নরসিংদীর পলাশ উপজেলার আনোয়ারা খানম ডলি। যিনি এক জোড়া কোয়েল পাখি দিয়ে আজ লাখো পাখির মালিক।

পলাশ উপজেলার পলাশের চর গ্রামে তার বসবাস। স্বামী দিদার আলম ছিলেন একজন পল্লী চিকিৎসক। তিনিও আজ প্রায় ৬ বছর হয় দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন।

ভোরে ঘুম থেকে উঠেই খামারের দেখাশোনা, পাখির খাবার, পানি, ঔষধ, রোগ নির্ণয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারিদের সাথে মোবাইলে সমস্যার সমাধান, পাখি, ডিম ও বাচ্চার অর্ডার নেওয়া। প্রতিদিন এসকলই করতে হয় আনোয়ারা খানম ডলিকে। তবে কারখানা থেকে খাবার আনা ও পাখি সরবরাহসহ কিছু কিছু কাজে সহায়তা করে থাকেন তার ছেলে ও কয়েকজন কর্মী।

২০০২ সালে ছেলের জন্য কৌতুহলবশত বাবার বাড়ি থেকে একজোড়া কোয়েল পাখি সংগ্রহ করেন আনোয়ারা খানম ডলি। পাখি দুটির লালন পালনের মাধ্যমে ডিম পাওয়ার আনন্দ থেকেই শুরু হয় তার কোয়েল পাখির খামার করা। শুরু হয় জীবন সংগ্রাম। বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরেই শুরু হয় খামারটি। এভাবে কোয়েল পাখি পালন নিয়ে শুরু হয় ডলি খানমের সংগ্রাম। কোয়েল পাখির বাচ্চা সারা দেশে সরবরাহ করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, এর আয়ের অংশ দিয়ে এক ছেলেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার পড়িয়েছেন স্বামীহারা এই নারী। আরেক ছেলেকে পড়াচ্ছেন। কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করে তৈরি করেছেন দুটি বহুতল বাড়ি। কিনেছেন ডজন খানেক বাচ্চা তৈরির মেশিন, জেনারেটর ও বেশ কিছু জায়গা জমি।

হৃদয় কোয়েল হ্যাচারির মালিক আনোয়ারা থানম ডলি জানান, বিয়ের পর থেকেই তিনি তার জীবনকে সংগ্রামের পথে পরিচালিত করা শুরু করেন। তার দাবি সরকারের পক্ষ থেকে সম্মননা দিলে কাজের উৎসাহ-প্রেরণা বাড়বে আর না দিলেও কোন আপত্তি নেই।

আনোয়ারা থানম ডলির ছেলে মেহেদী হাসান হৃদয় জানান, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছেন পাখিদের পিছনে তার মা খুবই পরিশ্রম করে আসছে। সন্তানের মতো লালন-পালন করে বড় করে তুলছে পাখিদের। পাখি বিক্রির আয় দিয়ে তাদের দুই ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতেন মা। গত ছয় বছর আগে বাবা মারা গেলে পুরো খামারটি পরিচালনায় মাকে সাহায্য করে আসছেন তিনি।

নাসিব নারী উদ্যোক্তা কাউন্সিলের নরসিংদী জেলা শাখার সাবেক সভানেত্রী কামরুন নেছা বলেন, তৃণমূল থেকে সংগ্রামী নারীদের উঠিয়ে এনে যদি সম্মাননা দেওয়া হয় তবে নতুনরা উৎসাহী হওয়ার পাশাপাশি দেশ সমৃদ্ধি হবে।

মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের নরসিংদীর উপপরিচালক সেলিনা আক্তার জানান, মহিলা বিষয়ক অধিদফতর মূলত মহিলাদের নিয়েই কাজ করে থাকে। তাই এই নারীকেও আগামী দিনে সম্মাননা দেওয়া যায় কিনা বিষয়টি দেখা হবে। সম্মাননা দিলে নারীরা কাজে উৎসাহ পায় বলেও জানান তিনি।

নারীদের শুধুমাত্র নারী দিবসে স্মরণ নয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সংগ্রামী নারীদের খোঁজে বের করে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণ আশা করেন সচেতন মহল।

;

বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল

ছবি: বার্তা২৪.কম

সরকারের বেঁধে দেওয়া নতুন দামে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাতে রাজধানীর মিরপুরে কয়েকটি পেট্রোল পাম্প ঘুরে দেখা গেছে, বেঁধে দেওয়া নতুন দামে বিক্রি করা হচ্ছে ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেন।

এর আগে, দুপুরে জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ডিজেল ও কেরোসিন ১০৯ টাকা থেকে ৭৫ পয়সা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১০৮.২৫ পয়সা। পেট্রোল ১২৫ টাকা থেকে ৩ টাকা কমিয়ে ১২২ টাকা এবং অকটেন ১৩০ টাকা থেকে ৪ টাকা কমিয়ে ১২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

সনি সিনেমা হলের বিপরীতে স্যাম ফিলিং স্টেশনে কথা হয় বাসচালক হোসেন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম কমার খবরে আমরা খুশি। এর আগেও অকটেন ১৩৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩০ টাকা করছিলো। এখন আবার ৪ টাকা কমিয়ে ১২৬ টাকা করেছে। এতে সাধারণ মানুষের ওপর কিছুটা হলেও চাপ কমবে বলে মনে করেন তিনি।

মোটরসাইকেল চালক হাসিব বলেন, তেলের দাম কমাতে খুশি হয়েছি। রমজানের আর কয়েকদিন বাকি। এমন সময় দাম কমানোর সিদ্ধান্তে পণ্য পরিবহন খরচ কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা তার। আর পরিবহন খরচ কমলে জিনিসের দামও কমবে।

পেট্রোল পাম্প স্যাম ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার আমজাদ হোসেন বলেন, সকালে বিভিন্ন পত্রিকায় দেখেছিলাম ১৫ টাকা করে দাম কমবে। কিন্তু বিকেলে দেখলাম ডিজেল ৭৫ পয়সা, পেট্রোল ৩ ও অকটেনের দাম ৪ টাকা কমেছে।

তার ধারণা যে পরিমাণে তেলের দাম কমেছে এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমবে না। এতে বাস মালিকদের কিছুটা লাভ হবে। এছাড়া কিছু না। তবে লিটারে যদি দশ থেকে পনেরো টাকা কমতো তাহলে কিছুটা প্রভাব বাজারে পরতো।

সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হয়। ওইদিন প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৯ টাকা, পেট্রোল ১৩০ থেকে কমিয়ে ১২৫ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর নজিরবিহীন দাম বাড়ানো হয় ২০২২ সালের ৫ আগস্ট রাতে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) জারি করা আদেশে ডিজেল ও কেরোসিন লিটার প্রতি ৩৪ টাকা এবং পেট্রল ও অকটেনে ৪৬ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১১৪ টাকা লিটার, পেট্রোল ১৩০ টাকা এবং অকটেন ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

ওই দাম বৃদ্ধির পর গণপরিবহনের ভাড়া বেড়েছিল সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ। তারপূর্বে ২০২১ সালের নভেম্বর প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকায় করা হয়। ওই সময়েও পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *