খেলার খবর

তাহলে হাটটি বসবে কোথায়?

ডেস্ক রিপোর্ট: মেহেরপুরের গাংনী পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় সভাপতি নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন গাংনী পৌর কর্তৃপক্ষ। যার প্রমাণ মিলেছে গাংনী সাপ্তাহিক হাট ফুটবল মাঠে স্থানান্তরে বাধা দেয়ার মধ্য দিয়ে। এলাকার স্বার্থে ফুটবল মাঠ সংস্কারে পৌর কর্তৃপক্ষের অবদান থাকলেও গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান ঠিক উল্টো। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, হাটটি অন্য কোথাও স্থানান্তর না করা পর্যন্ত সুপার মার্কেট নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পৌর কর্তৃক্ষ জানায়, গাংনী শহরে রয়েছে গাংনী পৌর তহহাট। এখানে প্রতিদিন মাছ, মাংস ও সবজি বিক্রির পাশাপাশি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে। এ হাটের ব্যবসায়িরা স্বাচ্ছন্দ্যে যাতে ব্যবসা করতে পারে সেজন্য পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণের প্রকল্প হতে নেয়া হয়। ব্যায় ধরা হয় ১৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা।  কাজের মেয়াদ কাল প্রায় দুই বছর। এ সময়ে পৌর তহ হাটের ব্যবসায়ীদের জন্য অস্থায়ী স্থান নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তহবাজারটিতে (টবাজার) স্থানীয় কাঁচা বাজারে স্থানান্তর করা হয়। তবে কাঁচা বাজারে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সাপ্তাহিক হাটটি ফুটবল মাঠে বসানোর জন্য এলাকাতে মাইকিং করা হয়। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) থেকে হাট বসানোর কথা ছিল। এরই মধ্যে বাধা হয়ে দাড়ায় গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, গাংনী হাইস্কুল ফুটবল মাঠ দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত। গাংনীর মানুষের একমাত্র খেলার মাঠটি গেল বছর মাটি ভরাট করে সংস্কার করেন গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী। এতে মাঠে আবারও খেলাধুলা করার সুযোগ পায় স্থানীয়রা। পৌর কর্তৃপক্ষ মাঠের বিষয়টি ভাবনার মধ্যে রাখলেও এখন জনস্বার্থে সপ্তাহে দুইদিন হাট বসানোর কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও গাংনী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশারফ হোসেন ও যুবলীগ সম্পাদক গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের প্রভাষক শফি কামাল পলাশ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এতে হাটটি না বসানোর দাবি জানানো হয়। এখানে জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করা হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলীর সাথে রাজনৈতিক মনোদ্বন্দ্ব রয়েছে মোশারফ হোসেনের। এক সময় একই বৃন্তে থাকলেও বেশ কিছুদিন যাবত দুজন দু’মেরুতে অবস্থান নেয়। এটি প্রকট আকার ধারণ করে গেল জাতীয় নির্বাচনের সময়। নৌকা প্রার্থী নাজমুল হক সাগরের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন মেয়র আহম্মেদ আলী। পক্ষান্তরে স্বতন্ত্র প্রার্থী মকবুল হোসেনের পক্ষ নেন মোশারফ হোসেন ও শফি কামাল পলাশ।

কয়েকজন ব্যবসায় জানান, পৌর মার্কেটটি নির্মিত হলে ব্যবসায়ি সুন্দর পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা করতে পারবেন। অথচ সাপ্তাহিক হাটটি সরানো না গেলে মার্কেটটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। আবার হাটের জন্য অস্থায়ী স্থান নির্ধারণ না করা হলে ব্যবসায়িরা বিপাকে পড়বেন। তারা এখানে ব্যবসা না করতে পারলেও অন্যস্থানে জায়গা করে নিবেন। এ হাটের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন সহ্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাছাড়া স্থানীয়দের স্বাপ্তাতিক বাজার করার জন্য গাংনী হাট অন্যতম একটি হাট হিসেবে বিবেচিত। ফুটবল মাঠে জায়গা না পাওয়ায় এ  হাটটির ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইজারদারগণ।

জানা গেছে, গাংনী ফুটবল মাঠের জমি গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একার নয়। ব্যাক্তি মালিকানাধিন বসত ভিটা ছাড়াও স্থানীয় তহশীল অফিসের জমি রয়েছে। কিন্তু মাঠটি নিজেদের বলে দাবি করে জনগনের স্বার্থের কথা না ভেবে অস্থায়ী হাট বসানোয় বাধা দেয়া হচ্ছে।

গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী জানান, ফুটবল মাঠে হাটটি বসানোর কথা ছিল। সেটি বাধা দিচ্ছেন গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেহেতু জায়গাটি তাদের তারা পৌরসভাকে বলতে পারতো কিন্তু তা না করে সংবাদ সম্মেলন করে নোংরা রাজনৈতিক পরিচয় দিয়েছেন। তাছাড়া সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পিতভাবে বাধাগ্রস্থ করছে।

তিনি আরো জানান, গাংনী শহরে তেমন কোন সরকারি জায়গা নেই। যেকানে স্বাপ্তাহিক হাট বসানো যায়। তবে সুবিধাজনক স্থানে বিশেষ করে রাস্তার পাশে হলেও দ্রুত সাপ্তাহিক হাট বসানো হবে ও মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *