খেলার খবর

বিটিএস এর টানে কোরিয়ার সমর্থকদের ভিড় ইনডোরে

ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পপ ব্র্যান্ড দক্ষিণ কোরিয়ার বিটিএস। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপি ছড়িয়েছে এর খ্যাতি। বাংলাদেশেও প্রচোর বিটিএস ফ্যান রয়েছে, বিশেষ করে তরুণীরা। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কাপ ২০২৪ আন্তর্জাতিক কাবাডিতে খেলতে এসে সেই বিটিএস ফ্যানদেরই সমর্থন পাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। মঙ্গলবার মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের গ্যালারি জুড়ে বসে আছে শতাধিক স্কুলের ছাত্রীকে দেখা গেছে কোরিয়াকে সমর্থন দিয়ে গলা ফাটাতে।

দক্ষিণ কোরিয়াকে সমর্থন দেওয়া তরুণীদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তারা স্থানীয় আলীম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে। ইন্দোনেশিয়া-দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচ শুরুর আগে কোরিয়ান খেলোয়াড়রা যখন কোর্টে ঢুকছিলেন, তখন ওই ছাত্রীরা গ্যালারি থেকে তারস্বরে চিৎকার করে ওঠে। তাদের অনেকেই কোরিয়ান খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে ‘উড়ন্ত চুম্বন’ ছুঁড়ে দিচ্ছিল। তাদের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। এত দল থাকতে কোরিয়ান খেলোয়াড়দের জন্য তাদের এই ভালোবাসার কারণ কি? কারণ জানার জন্য দ্বারস্থ হতে হলো স্কুলটির সিনিয়র শিক্ষিকা শরীফা আক্তারের। তার মাধ্যমে কথা হয় স্কুলটির চার শিক্ষার্থীর সঙ্গে। অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিম আক্তার ও সাদিয়া আক্তার। নবম শ্রেণীতে পড়ে ফাতেমা গাজী মেহেরুন এবং আনিকা আক্তার লিলি।

মিম ও সাদিয়া সলজ্জ্ব কণ্ঠে জানালো, ‘কোরিয়া দল ও তাদের সংস্কৃতি আমাদের অনেক ভাল লাগে। ওদের সবকিছুই অনেক ভাল লাগে। আসলে কোরিয়া দলকে সাপোর্ট করছি দেশটির বিশ্বখ্যাত পপ-ব্যান্ড দল বিটিএস-এর কারণে! বিটিএসের গায়কদের মাঝেই যেন এই কোরিয়ান কাবাডি দলকে খুঁজে পাচ্ছি।’

তবে এ বিষয়ে কিঞ্চিৎ দ্বিমত পোষণ করে মেহেরুন ও লিলি, ‘আমরা কোরিয়ান দলকে সমর্থন করছি তাদের খেলার স্টাইলের কারণে।’ এই চার কোরিয়ান-ভক্ত মঙ্গলবারই প্রথমবারের মতো মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসে। এখানে আসতে পেরে দারুণ খুশি তারা। স্কুলের শিক্ষকদের কাছে এই কাবাডি টুর্নামেন্টের কথা শুনেই তারা স্টেডিয়ামে আসতে আগ্রহী হয়। সময়-সুযোগ পেলে আগামীতে ভলিবল-ক্রিকেট খেলাও দেখতে আসতে চায়।

মেহেরুন-লিলি আরও যোগ করে, ‘কোরিয়ান কাবাডি দলের মতো আমরাও এই প্রথম এই স্টেডিয়ামে এসেছি। এর আগে টিভিতে বাংলাদেশসহ আরও অনেক দলের খেলা দেখেছি। জানি এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে সবচেয়ে বড় সমর্থন বাংলাদেশের প্রতিই থাকবে। তারপরই কোরিয়া।’ বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে মিম-সাদিয়াও।

মিম-সাদিয়া বিটিএস ব্যান্ডের যে ভক্ত, তার খানিকটা পরীক্ষাও দিল, ‘বিটিএস ব্যান্ডে মোট সাত জন গান গায়। সবার নামও জানি-জাংকুক, জি, সুগা, আরএম, জিমিন, জে-হোপ এবং ভি। প্রায় দেড় বছর ধরে আমরা বিটিএস ব্যান্ডের ভক্ত।’ কিছুদিন আগে বিটিএস ব্যান্ডের সদস্যদের প্রেমে পড়ে বাংলাদেশের তিন কিশোরী ঘর ছেড়ে পালিয়েছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল চাকরি করে, টাকা জমিয়ে, কোরিয়ান ভাষা শিখে কোরিয়া গিয়ে জাংকুকদের সঙ্গে দেখা করবে (সম্ভব হলেও বিয়েও!)। এ ঘটনার কথা মিম-সাদিয়ারা জানে। এ ব্যাপারে তাদের ভাষ্য, ‘ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে তারা মোটেও ঠিক কাজ করিনি। আমরা কোনদিনও এমনটা করবো না।’

মেহেরুন চাঁদপুরে নিজের গ্রামে গিয়ে কাবাডি খেলেছে শখ করে। এমনিতে তারা স্কুলে ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, কাবাডি, ক্রিকেট খেলে থাকে। সবশেষে সবাই জানায়, কালও তারা কাবাডি খেলা দেখতে আসবে এবং মনেপ্রাণে কামনা করে বাংলাদেশ যেন আবারও শিরোপা জেতে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *