খেলার খবর

১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমিষে শেষ কৃষ্ণার!

ডেস্ক রিপোর্ট: শক্তিশালী চীনা তাইপের বিপক্ষে বিকেলে মাঠে নামছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। সেই দলের হয়ে মাঠে নামবেন বলে অনুশীলনও করছিলেন কৃষ্ণা রানি সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত চোটের কারণে স্কোয়াডে জায়গা হয়নি ২০২২ সাফ জয়ী এই নারী ফুটবলারের। যা নিয়েই এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেগী পোস্ট দিয়েছেন কৃষ্ণা। আঙুল তুলেছেন বাফুফের দিকে।

২০২২ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পরপরই চোটে পড়েন কৃষ্ণা। অথচ, এতদিন পেরিয়ে গেলেও চোট সারিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। চোট সারাতে দেশে অনেক চিকিৎসা করিয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর সঙ্গেও কথা বলেছেন। তিনি পরামর্শ দেন অস্ট্রেলিয়া বা ভারতে গিয়ে ট্রিটমেন্ট নিতে। যা নিয়ে বাফুফের সঙ্গে কথা বলেন কৃষ্ণা।

যদিও তাকে বিদেশে পাঠায়নি বাফুফে। শেষে লম্বা সময় ফুটবল থেকে দূরে থেকে থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। সেই মানসিক অবসাদ কাটাতে শেষটায় চোট নিয়েই অনুশীলন করছিলেন ফের ফিরবেন ভেবে। তবে শেষ পর্যন্ত ফেরা হয়নি তার। চীনা তাইপের বিপক্ষে স্কোয়াডে রাখা হয়নি কৃষ্ণাকে। যা নিয়েই সামাজিক মাধ্যমে আবেগী পোস্ট দিয়েছেন কৃষ্ণা।

পোস্টে কৃষ্ণা লিখেছেন, ‘২০২২ এ সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ইঞ্জুরিতে পরি। প্রায়ই দেড় বছর হয়ে গেছে। পা আগে থেকে ভালো কিন্তু এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়ে উঠতে পারিনি। প্র্যাকটিস করলেই ব্যথা হয়। বাফুফে ফিজিও দিয়ে আমার ট্রিটমেন্ট চলছে। সবাই জানে ইনজুরি টা অনেক রেয়ার। ব্যথা নিয়েই প্র্যাকটিস করতেছি। দেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি।’

কৃষ্ণা আরও বলেন, ‘২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেকদিন দেখেন, যখন ব্যথা কমতে ছিল না। স্যার বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া, ইন্ডিয়া গিয়ে ট্রিটমেন্ট করাতে। কিন্তু যখন আমি বাফুফে জানাই, উনারা বলেন আরো কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেকদিন তাদেরকে ইন্ডিয়াতে যাওয়ার কথা বলছি। কিন্তু উনারা আমার কথায় কোন গুরুত্ব দেয়নি। আজও পর্যন্ত ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি।’

ক্যারিয়ারের শুরুর কথা টেনে কৃষ্ণা আরও বলেন, ‘২০১৩ সালে অনূর্ধ্ব ১৪ দলে সুযোগ পাই এবং ২০১৪ সালে সিনিয়ার জাতীয় দলে সুযোগ পাই, সেখান থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কখনো কোনো দলের বাইরে থাকে হয়নি। প্রায় ১০ বছর একটানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি। টুকটাক ইনজুরিতে পড়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে এত বড় ইনজুরিতে পড়বো কখনো ভাবিনি। অনেকদিন রেস্টে থাকার পর আর ভালো লাগছিল না এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলাম। তাই ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি। চায়নাতে যখন এশিয়ান গেম খেলতে যাই, তিনটা ম্যাচ ব্রাঞ্চে বসে কাটিয়েছে। ব্যাক টু ব্যাক দুইটা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে গেলাম। একজন প্লেয়ার হিসেবে এইটা মেনে নেওয়া খুব দুঃখজনক।’

নিজের ক্যারিয়ার যে শেষের পথে সেটাও লিখেছেন কৃষ্ণা। তবে ফেরার আকুতি চেয়ে দোয়া চেয়েছেন এই সাফ জয়ী। বলেন, ‘কষ্ট একটাই কখনো কোন টিমমেট, প্লেয়ার বা কোচ কে বলতে দেখলাম না কৃষ্ণা ইনজুরি তাকে তাড়াতাড়ি ট্রিটমেন্ট করানো হোক। কারো কোন মাথা ব্যথাই নেই। ১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমিষে শেষ। অনেক প্লেয়ারকে দেখেছি এভাবে হারিয়ে যেতে। মনে হয় সেই দিনটা আর বেশি দিন নেই কৃষ্ণার জন্য। সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ এবং দোয়া করবেন। যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পরি। আবার আগের মতো মাঠে ফিরতে পারি।’

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ ডট কম-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *