আন্তর্জাতিক

বেনাপোলে ৬ দিনে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি শত কোটি টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট: শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তদের নাশকতার কারণে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। এসময় পণ্যবাহী ট্রাক আটকে থেকে এবং শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রায় শত কোটির টাকার মতো অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় সরকার ১শ ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ফের চালু হওয়ায় বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের আমদানি, রফতানি বাণিজ্য ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রম কিছুটা শুরু হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) থেকে বাণিজ্য কার্যক্রম অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।

এর আগে কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তরা ডাটা সেন্টারে আগুন দেওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) থেকে সারাদেশে বিচ্ছিন্ন ছিল ইন্টারনেট পরিষেবা।

এদিকে, আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তের দুইদিকে প্রায় ৩ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছিল। ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ায় এসব ট্রাক ঢুকতে শুরু করেছে বেনাপোল স্থলবন্দরে।

ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাকচালক অমিত জানান, ইন্টারনেট চালু হওয়াতে তারা বেনাপোল বন্দরে পণ্য নিয়ে প্রবেশ করতে পারছেন। গত ৬ দিন পেট্রাপোল বন্দরে আড়াই হাজারের বেশি ট্রাক প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিল বলে জানান তিনি।

সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী জানান, সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সচল হওয়ায় আটকে থাকা পণ্য বন্দর থেকে খালাস শুরু হয়েছে। তবে কাজে খুব ধীরগতি। ইন্টারনেট স্বাভাবিক না হলে বাণিজ্য পুরোদমে চালানোর সুযোগ নেই।

আমদানিকারক সাহেব আলী জানান, গত চারদিনে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। জরুরি কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ থাকায় শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। বেকার হয়ে পড়েন শ্রমিকেরা। অনেকের ধারণা, এসবের ক্ষতি ১শ কোটি টাকার কাছাকাছি হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহামুদ বিপুল জানান, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৬শ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি ও ২শ ট্রাক পণ্য ভারতে রফতানি হয়ে থাকে।

আমদানি পণ্য থেকে দিনে সরকারের রাজস্ব আসে ৩০ কোটি টাকার মতো। গত ৬ দিন আমদানি বন্ধে প্রায় ১শ ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কমেছে। এছাড়া আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে, ৬০ হাজার মেট্রিক টনের মতো।

বড় ক্ষতির মুখে পড়ে রফতানি বাণিজ্যও। করোনার ক্ষতি না কাটতেই আবার বাণিজ্যে এই ক্ষতি আগামী বছর রাজস্ব আয় ও আমদানি বাণিজ্যে ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম জানিয়েছেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সার্ভার বিকল ছিল চারদিন। এতে বন্দরের স্বাভাবিক বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে।

বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হওয়ায় তারা কিছুটা বাণিজ্যিক কাজ সম্পাদন করতে পারছেন। ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রুত পণ্য খালাস নিতে পারেন, সেজন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *