সারাদেশ

আহত সবার চিকিৎসা ও আয় রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: নরসিংদীতে দিনে দিনে কমছে পাটের আবাদ। কৃষকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এক সময়ের সোঁনালী আঁশ পাটের আবাদ থেকে। কৃষকদের অভিযোগ পাটের বাজার মূল্যের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশী হওয়ায় তারা পাটের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

বাংলাদেশে পাটকে এক সময় বলা হতো সোঁনালী আঁশ। আজ সেই সোঁনালী আঁশ কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাড়িয়েছে। কেননা দশ বছর আগেও যে কৃষক ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতেন তিনিই এখন চাষ করেন মাত্র ২ বিঘা জমিতে। যার ফলে এখন জৈষ্ঠ্য-আষাঢ় মাসে ফসলের মাঠে আর তেমন দেখা মেলেনা বিস্তীর্ণ সবুজ পাট খেতের। বর্ষাকালে পর্যাপ্ত পানি না থাকা, পাটের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত, শ্রমিকের অতিরিক্ত মজুরি ও কৃষি বিভাগের উদাসীনতাকে দায়ী করে পাটচাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষকরা। আর যারাও অল্প পরিমাণে করছেন তারা লোকসান জেনেও একান্তই নিজেদের পারিবারিক প্রয়োজনে করছেন। আর এসব কারনে গত ১০ বছরে নরসিংদী জেলায় পাটচাষ কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। আর দুই দশকে সে পরিমাণ প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি। সেই সাথে কমেছে পাটচাষীর সংখ্যাও।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় ২০১৩ সালে পাটচাষ ছিল ৪ হাজার ৪ শত ১৪ হেক্টর, ২০১৫ সালে ৩ হাজার ৪৩ হেক্টর, ২০২০ সালে ২ হাজার ৬ শত ৮৫ হেক্টর এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে হ্রাস পেয়ে তা দাড়িয়েছে ২ হাজার ৪ শত ৭০ হেক্টরে।

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হুগলাকান্দি গ্রামের কৃষক আহমদ আলী জানান, ১৫ বছর আগেও তিনি প্রায় ৩শ শতকেরও বেশি জমিতে পাট চাষ করতেন। আর এবছর তিনি মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে পাট চাষ করেছেন। কেন কমিয়ে আনছেন পাটের আবাদ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, পাট চাষ করার জন্য যে শ্রমিকের প্রয়োজন, বর্তমান সময়ে এর মূল্য অতিরিক্ত। এছাড়া পাট জাগ দেয়ার পানির স্বল্পতা এবং বাজারে এর সঠিক দাম পাওয়া যায় না।

একই এলাকার আরেক পাটচাষী আহমদ আলী। কেনো পাটচাষ করতে আগ্রহী নয় কৃষকরা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বর্ষাকালে পর্যাপ্ত পানি না থাকা, পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া, শ্রমিকের বাড়তি মজুরি, দালালের দৌরাত্ম্য ও কৃষি বিভাগের উদাসীনতাসহ বিভিন্ন কারণে পাটচাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। আর যারাও করছেন তারা নিতান্তই নিজেদের পারিবারিক প্রয়োজনে।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজিজুর রহমান জানান, কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ন্যায্যমূল্যে মাঠ থেকে পাট ক্রয় করা গেলে কৃষকরা লাভবান হতো। এছাড়া পাটের সুদিন ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

কৃষকরা পাটের ন্যায্যমূল্য পাবে, নরসিংদীর ফসলের মাঠে আবারও পাট চাষের মাধ্যমে সবুজ শ্যামল পাটগাছ বাতাসে দোল খাবে, কৃষকের মনে আনন্দ আর মুখে হাসি ফুটে উঠবে, এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *