সারাদেশ

দেশীয় খেলাগুলো যেন হারিয়ে না যায়, সেটির উদ্যোগ নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: আজ দেশব্যাপী ‘বাংলা ইশারা ভাষা দিবস’ পালিত হবে। যেহেতু শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী মানুষ ইশারার মাধ্যমে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে থাকেন। তাই তাদের এ ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে পালিত হয়ে আসছে ‘বাংলা ইশারা ভাষা দিবস’।

২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ৭ ফেব্রুয়ারিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলা ইশারা ভাষা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

নিজের ভাষায় কথা বলার জন্য কত যুদ্ধ, পরিশ্রম। অথচ অনেকই আছেন যাদের ভাগ্যে নিজের ভাষাটুকু উচ্চারণের সেই সুযোগটাই হয়নি আর হয়তো হবেও না। তারা তাদের মনের ভাষা ব্যক্ত করেন নিজের ইশারার মাধ্যমে। সেই ইশারায় কিছু ভাষা রয়েছে। শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী মানুষ ইশারার মাধ্যমে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে।

ইশারা ভাষা বা সাংকেতিক ভাষা বা প্রতীকী ভাষা বলতে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশেষ করে হাত ও বাহু নড়ানোর মাধ্যমে যোগাযোগ করার পদ্ধতিকে বোঝানো হয়। মুখের ভাষাতে যোগাযোগ করা অসম্ভব বা অযাচিত হলে এই ভাষা ব্যবহার করা হয়। সম্ভবত মুখের ভাষার আগেই ইশারা ভাষার উদ্ভব ঘটে।

ইশারা ভাষা বলতে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশেষ করে হাত ও বাহু নাড়ানোর মাধ্যমে যোগাযোগ করার পদ্ধতিকে বোঝানো হয়। মুখের ভাষায় যোগাযোগ করা অসম্ভব বা অযাচিত হলে এ ভাষা ব্যবহার করা হয়।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের জামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। অনেকটা সময় তার সঙ্গে ইশারাতেই কথা বলতে হয়। তবে ছোটবেলায় আমি নাকি তার সঙ্গে ইশারায় কথা বলতে চাইতাম না, তাকে বাবা বলেও ডাকতাম না। তার খুব আফসোস হতো আমি তাকে বাবা বলে ডাকতাম না বলে। এজন্য তখন আমার চাচাদের কাছে অভিযোগ করত। অবশ্য সেসব অভিযোগ কিংবা অভিমান এখন আর নেই। মিলেমিশে ইশারা ইঙ্গিতেই তার সঙ্গে চলে আমার ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথোপকথন।’ 

মুখের বিভিন্ন ভঙ্গিমা, কাঁধের ওঠা-নামা কিংবা আঙুল তাক করাকে মোটা দাগে ইশারা ভাষা হিসেবে গণ্য করা যায়। সভ্যতার বিকাশের আগে ইশারা ভাষাই প্রচলিত ছিল। তবে প্রকৃত ইশারা ভাষায় হাত ও আঙুল দিয়ে সৃষ্ট সুচিন্তিত ও সুক্ষ্ম দ্যোতনাবিশিষ্ট সংকেত সমষ্টি ব্যবহৃত হয়। এর সাথে সাধারণত মুখমণ্ডলের অভিব্যক্তিও যুক্ত করা হয়। মূক ও বধির লোকেরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ইশারা ভাষা ব্যবহার করে থাকেন।

কুষ্টিয়া জেলা মুক ও বধির সংঘের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান সুমন বলেন, ‘সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় শ্রবণ-বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করতে না পারলে তাদের উন্নয়ন যেমন সম্ভব নয় তেমনি সম্ভব নয় দেশের সার্বিক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা। এ লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে ও কল্যাণে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশনে সংবাদ হলে সংবাদ পাঠের পাশাপাশি ইশারা ভাষায় যে প্রচলন রয়েছে ঠিক তেমনি প্রতিটি জেলায় সরকারি বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে এমন দোভাষী হিসেবে ইশারা ভাষা ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’ 

কুষ্টিয়া জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল কাদের বলেন, ‘এ জেলায় প্রতিবন্ধীর হার সবচেয়ে বেশি। ৬৬ হাজার প্রতিবন্ধীর মধ্যে বাক প্রতিবন্ধী ৩ হাজার ৩৬৮ এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী ৩ হাজার ২৩ জন।’

তিনি বলেন, ‘সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় শ্রবণ-বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করতেও কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ জেলায় বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য বিদ্যালয় চালু করলে তাদের অনেকটাই উপকারে আসবে।’ 

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *