আন্তর্জাতিক

২৩ শতাংশ প্রবাসীর এনআইডির আবেদন অনুমোদন দিয়েছে ইসি

ডেস্ক রিপোর্ট: বিভিন্ন দেশে থাকা দেশি প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবারহে মোট আবেদনের ২৩ শতাংশ অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন ইসি। ইসি সূত্রে জানা যায়, ইসিতে এনআইডি সরবরাহ কার্যক্রমে আবেদন পড়েছে ১৭ হাজার ১১৭৫টি। এর মধ্যে তদন্ত শেষে অনুমোদিত আবেদনের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার ৯৭২টি। অর্থাৎ আবেদনকারীদের মধ্যে ২৩ শতাংশ নাগরিক এনআইডি পাচ্ছেন। বাকি সংখ্যক আবেদনের তদন্ত শেষ না হওয়ায় এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানা গেছে।

গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রবাসীদের অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে এনআইডি পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করে ইসি। আবেদনে ভালো সাড়া পাচ্ছে বলে মনে করছেন ইসি কর্মকর্তারা। তবে সকল কাগজপত্র না থাকায় অনেকেই আবেদন করছেন না বলেও পর্যবেক্ষণ তাদের।

ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছেন, আবেদন শুরু হওয়ার পর থেকে গত জানুয়ারি পর্যন্ত সিঙ্গাপুর থেকে আবেদন পড়েছে ৪৮০টি, অনুমোদন হয়েছে ২০টি; মালয়েশিয়া থেকে আবেদন পড়েছে ৫৯০টি, অনুমোদন হয়েছে ৫৭টি; ব্রিটেন থেকে আবেদন পড়েছে এক হাজার ৮৫৫টি, অনুমোদন হয়েছে ৮০টি।

এছাড়া ইতালি থেকে আবেদন এসেছে এক হাজার ২৬১টি, অনুমোদন হয়েছে ৬৭টি; মালদ্বীপ থেকে আবেদন পড়েছে ৫৪টি, অনুমোদন হয়েছে তিনটি; সৌদি আরব থেকে আবেদন পড়েছে দুই হাজার ১৬৬টি, অনুমোদন হয়েছে ১২১টি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আবেদন এসেছে ১০ হাজার ৭৬৯টি, অনুমোদন হয়েছে তিন হাজার ৬২৪টি।

সাতটি দেশ থেকে মোট আবেদন এসেছে ১৭ হাজার ১৭৫টি। এরমধ্যে অনুমোদন হয়েছে তিন হাজার ৯৭২টি। অর্থাৎ মোট আবেদনের ২৩ দশমিক ১৩ শতাংশ অনুমোদন হয়েছে।

এদিকে আবেদন বাতিল হয়েছে দুই হাজার ৪৯৪টি, যা মোট আবেদনের ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ। তদন্তাধীন রয়েছে ৩৫৫টি আবেদন। অন্যদিকে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়নি এমন নতুন আবেদন রয়েছে ১০ হাজার ৩৫৪টি, যা মোট আবেদনের ৬০ দশমিক ২৯ শতাংশ।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, পাসপোর্ট ছাড়া কারো আবেদনই আমরা আমলে নিচ্ছি না। এক্ষেত্রে যারা অবৈধভাবে প্রবাসজীবন কাটাচ্ছেন, তাদের জন্য আমরা কিছু করতে পারছি না। কেননা, নীতিমালা অনুযায়ী, অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বা বৈধ পাসপোর্ট যাদের নেই তাদের আবেদন আমলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, অনেকেই আবেদন করলেও তদন্তে গিয়ে সতত্য মিলছে না। ফলে তাদের আবেদন বাতিল করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের দেশে এসেই আবেদন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থারত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়।

সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সতত্যা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করেন। এক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা। ভবিষ্যতে ৪০টি দেশে এনআইডি সেবা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।

প্রবাসীদের আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র জমা দিতে হবে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-অনলাইন জন্মসনদ, বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্টের কপি, এসএসসি/সমমানের শিক্ষা সনদ, আবেদনকারীর পিতা/মাতা/ভাই/বোন অথবা একজন রক্তের সম্পর্কীয় নিকট আত্মীয়ের (বাংলাদেশে বসবাসকারী) এনআইডি নম্বর প্রভৃতি। এছাড়া পাসপোর্ট ও জন্ম সনদের তথ্যের মধ্যে মিল থাকতে হবে।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *