বিনোদন

একটা সময় ১০০ কোটিও খুব কম মনে হবে : শাকিব খান

ডেস্ক রিপোর্টঃ বড় সিনেমা করতে গেলে বড় প্রযোজক, বড় পরিচালক আর বড় তারকাই দরকার হয়। এইসব মিলিয়ে বড় পর্দায় ঝড় তুলতে আসছে ‘তুফান’। বাংলা চলচ্চিত্রে ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। দুই বাংলার স্বনামধন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আই, চরকি ও এসভিএফ ফিল্মস এবার এক হয়েছে।

পাশের দেশের সিনেমার বক্স অফিসে প্রায়শই শত কোটির হিসেব শোনা যায়! শুধু হিন্দি ছবি নয়, অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার সিনেমাতেও এমনটা ঘটছে হরহামেশায়! সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে বহুগুণ! এখনতো আর শত কোটিতেও আটকে নেই, মাঝেমধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা আয়ের সংবাদও ভেসে আসে! সেদিক থেকে বাংলাদেশ তথা বাংলা সিনেমা কেন পারছে না মার্কেট ধরতে? সে লক্ষ্যেই এবার বড় পরিসরে সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিলো বাংলাদেশ ও ভারতের এই তিনটি প্রযোজনা সংস্থা।
এরই মধ্যে তারা দুটি সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। প্রথম সিনেমা ‘দম’-এর ঘোষণা দেওয়া হয় গত ৯ ডিসেম্বর। রেদোয়ান রনি পরিচালিত সেই সিনেমায় অভিনয় করবেন চঞ্চল চৌধুরী।

আর গতকাল ১১ ডিসেম্বর রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয় দ্বিতীয় সিনেমা ‘তুফান’-এর। আগামী ইদ-উল-আযহায় মুক্তি পাবে সিনেমাটি। যেনো সব জল্পনা, কল্পনা, গুঞ্জনের অবসান হলো। এবার রায়হান রাফীর পরিচালনায় বড় পর্দায় আছে বাংলাদেশের সুপারস্টার শাকিব খান।

সংবাদ সম্মেলনে ‘তুফান’ টিম 

মঞ্চে তাকে ডেকে নেয়ার পর বিশ্বব্যাপী বাংলা সিনেমার দর্শক নিয়ে কথা বলেন এই নায়ক। এ সময় নিজের সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ছবি ‘প্রিয়তমা’র সাফল্য নিয়ে কথা বলেন তিনি। ছবিটি দেশের বাইরে প্রবাসী বাঙালিদের ভালোবাসায় নিজের মুগ্ধতার কথাও শোনান। শাকিব বলেন, “আমরা ১০০ কোটির ক্লাবে কবে যাবো, সেদিকেই তাকিয়ে আছি। যদিও আমার মনে হয় সেদিন আর বেশী দূরে নয়, কারণ ‘তুফান’ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্যতম দুই প্রযোজনা সংস্থা চরকি ও আলফা আইয়ের সাথে কলকাতার এসভিএফ একসাথে হয়েছে- হয়তো অচিরেই আমরাও বলতে পারবো বক্স অফিসে আমাদের গ্রস সেল ১০০ কোটি হয়েছে!”

ভিনদেশে বাংলা সিনেমার বড় মার্কেট তৈরী হয়ে আছে জানিয়ে শাকিব আরো বলেন, `একটা সময় হয়তো ১০০ কোটি টাকাও বাংলা সিনেমার জন্য খুব কম টাকা মনে হবে। কারণ বাংলার যে পপুলেশন, সেটার কিছু ধারণা পেয়েছি। নর্থ আমেরিকার কথা যদি বলি, সেখানেই মিলিয়নের বেশী বাংলাদেশি বাস করেন। একইভাবে পশ্চিমবঙ্গেরও মানুষ সেখানে বাস করেন। সব মিলিয়ে শুধু নর্থ আমেরিকাতেই বিশ-ত্রিশ লাখের মতো বাঙালি দর্শক আছে। তারমানে হলো, সেখানে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের বাজার অপেক্ষা করছে। শুধু দরকার ছিলো বাংলার একটা কোলাবরেশনের। সবাই একসাথে মিলে কাজ করার। কারণ সবাই একসাথে মিলে কাজ না করলে বড় কিছু অর্জন সম্ভব নয়।’

‘তুফান’ সিনেমার পোস্টারে শাকিব খান

পরিচালক রায়হান রাফী সিনেমাটা নিয়ে বেশ এক্সসাইটেড। তিনি বলেন, ‘এক সাথে আলফা, এসভিএফ ও চরকি-তিনটা বড় প্রতিষ্ঠান এক সুতোয় গেঁথে দুইটা সিনেমা বানাচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশের একমাত্র সুপারস্টার শাকিব খান তার সাথে এটা আমার প্রথম সিনেমা। সবচেয়ে বড় তিনটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, একজন সবচেয়ে বড় সুপারস্টার যখন এক সাথে হয় তখন আসলে এই সিনেমা নিয়ে আশা করাই যায়। কেবল তো আমরা কাজ শুরু করলাম। সবার দোয়া চাই। তবে এটা নির্দ্বিধায় বলতে পারি তুফান বাংলা সিনেমার জন্য একটা মাইলফলক হতে যাচ্ছে।’

আলফা-আই স্টুডিওজ লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘আলফা-আই স্টুডিওস সবসময় বাংলাদেশের বিনোদন জগতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। একটি অগ্রগামী চিন্তার প্রোডাকশন হাউস, আমরা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম যে বাঙালি দর্শক ভালো মানের কনটেন্ট দেখতে চায়। আমরা প্রতিবারই সেটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে বাংলাদেশে শাসন করছে এমন দুটি সেরা প্রতিভাকে একত্রিত করছি আমরা। একমাত্র সুপারস্টার শাকিব খান এবং বর্তমান সময়ের হিট পরিচালক রায়হান রাফি এক হয়েছে দর্শককে আরেকটি ব্লকবাস্টার সিনেমা দেয়ার জন্য।’

২৮ বছর ধরে যারা একাই বদল করে চলেছে বাংলা সিনেমার ইতিহাস! রেইনকোট, চোখের বালি, অটোগ্রাফ, ২২শে শ্রাবণ এর মতো অসংখ্য ফিল্ম দিয়ে যারা সমৃদ্ধ করেছে বাংলা ফিল্ম-এর ভান্ডার। বলছি এসভিএফ-এর কথা। এসভিএফ-এর ডিরেক্টর ও কো-ফাউন্ডার মহেন্দ্র সোনি বলেন, ‘আমরা বাংলা সিনেমায় একটি নতুন অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে। কারণ এসভিএফ, আলফা-আই, চরকি এবং মেগাস্টার শাকিব খানকে সাথে নিয়ে এমন একটি প্রযোজনা সামনে আনতে যাচ্ছি যা গল্প বলার স্কেলকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করবে। এই কলাবরেশন বাংলা চলচ্চিত্রকে অভূতপূর্ব বৈশ্বিক উচ্চতায় পৌঁছে দিতে প্রস্তুত। যা আমাদের সবার জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ‘তুফান’ টিম 

চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি জন্য সুসময় চলছে। আমাদের জন্যও খুব আনন্দের সময়। আলফা-আই, চরকি ও এসভিএফ মিলে বাংলা ভাষাভাষীর দর্শককে হলমুখী করতে ও আন্তর্জাতিক মানের কনটেন্ট দেয়ার জন্য এই উদ্যেগ নিয়েছে। কেননা এতো বড় ক্যানভাসে এতো বড় আয়োজনের বাংলা সিনেমা তথা বাঙ্গালী দর্শকের জন্য এই সিনেমা আমাদের উপহার হবে।’

এই প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন এসভিএফ বাংলাদেশে কান্ট্রি হেড সাকিব আর খান, চরকি ও আলফা-আইয়ের কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকবৃন্দ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪ এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *