সারাদেশ

বেনাপোলে নৌকা সমর্থকদের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ আহত ৬

ডেস্ক রিপোর্ট: ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনা নিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘আজকে সকালে আমরা দেখলাম তেজগাঁওয়ে চলন্ত ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেখানে আগুনে পুড়ে বেশ কয়েকজন মানুষ হতাহত হয়েছেন। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এরকম নাশকতার সাথে চলমান আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। এরা (সরকার) নাশকতা করে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতে চায়। আন্দোলনের উপর ক্র‍্যাক ডাউন করতে চায়।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর)  জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সভা সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ও ১ দফা দাবিতে দেশব্যাপী হরতালের সমর্থনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন,  এই দেশ লক্ষ লক্ষ মানুষ রক্ত দিয়ে তৈরি করেছে। এই দেশে জনগণের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে আনতে হবে। আর সেটা করতে গেলে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় দিয়ে একটা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা, এই ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা বদল করে বাংলাদেশে একটা নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। এরজন্য গণতন্ত্র মঞ্চ লড়াই করছে। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ,  ভোটের অধিকার, ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা, সুযোগের সমতা; সেই লড়াই চলবে। কোন শক্তি,  কোন দমন-পীড়ন এই লড়াইকে থামাতে পারবে না। আপনাদের যদি সাহস থাকে ঠেকান। আমরা রাস্তায় নামব। আমাদের কর্মীরা নৈতিক জোড় নিয়ে দেশপ্রেম নিয়ে রাস্তায় নামবে। আপনাদের কথায় আমরা ভয় পাই না।

তিনি আরও বলেন, সরকার বিরোধী দলের নেতাদের জেলে ঢুকিয়ে আন্দোলন করতে চায়। এটা আমরা আগেই বলেছি। এখন খোদ সরকারের কৃষিমন্ত্রী ঠান্ডা মাথায় টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছে তারা ভেবেচিন্তে পরিকল্পিতভাবে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জেলে রেখেছেন। উনাদেরকে জেলে না রাখলে নাকি এখন যে হরতাল অবরোধে গাড়ি চলে সেটা নাকি চলত না।

জাতীয় পার্টিকে উদ্দেশ্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বললেন ভিক্ষার সিট নিয়ে নাকি তিনি নির্বাচন করেন না। তার কয়েক ঘণ্টা পরে আমরা দেখলাম ২৬ টি আসন সমঝোতা করে তারা নির্বাচনে গেছেন। জনাব জি এম কাদের সাহেব আপনাকে জাতির কাছে বলতে হবে এই ২৬ টি আসন কী ভিক্ষা?’ 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারন সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটা পরিপত্র দিয়েছে। আর সেটাকে ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সভা সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা পরশুদিন বলেছি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি বেআইনি একটি নিষেধাজ্ঞা। এটা সংবিধান বহির্ভূত একটা নিষেধাজ্ঞা। তাদের যেমন ভোট চাওয়ার অধিকার আছে পাশাপাশি আমরা যারা এটাকে প্রহসনের নির্বাচন মনে করছি তাদেরও এই নির্বাচনের বিরোধিতা করার ‘নাগরিক অধিকার’ আছে। নির্বাচন কমিশন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় কোনো ধরনের প্রজ্ঞাপন জারি করে বা বিধিনিষেধ দিয়ে মুক্তিকামী মানুষের এই অধিকার বন্ধ করতে পারবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে চাই অনতিবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞার পরিপত্র প্রত্যাহার করুন।’

তিনি বলেন, গতকাল মস্কো থেকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মুখপাত্র মারিয়া যাকারোভা বলেছেন, বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি চলছে তাতে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পরবর্তীতে বাংলাদেশে নাকি একটা আরব বসন্ত দেখা দিবে। আরব বসন্তের অর্থ কি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি মানুষ রাজপথে আন্দোলন করতে নেমে এসেছে। আর আমি বলব এদেশে আরব বসন্ত নয়, হবে বাংলা বসন্ত। এই বাংলা বসন্তের জন্য মানুষ এবার তৈরি হচ্ছে। মানুষের পুঞ্জীভূত এই ক্ষোভের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাজপথে নেমে আসবে। এবং এ আশঙ্কায় সরকারের যে তাবেদার তারা তা বুঝতে পারছে। বাংলাদেশের ভাগ্য বাংলাদেশের মানুষই নির্ধারণ করবে।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন,  ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার প্রমুখ।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *