সারাদেশ

ভারত চীনসহ ভোট পর্যবেক্ষণে আসবে ৯ দেশ

ডেস্ক রিপোর্ট: অস্বাস্থ্যকর ও অপুষ্টিকর খাদ্য আজ সারা বিশ্বের অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশে ৭০% মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক রোগ, যা খাদ্যাভ্যাসের সাথে জড়িত। নগরায়ন এবং মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুদের খাদ্যাভ্যাসের বড় ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। শুধু বিজ্ঞাপন প্রচার বা সচেতনতা কোনো কার্যকর ব্যবস্থা হতে পারে না। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য নিরুৎসাহিত করতে কর আরোপ, বিজ্ঞাপন বন্ধ, লেবেলিং এবং প্যাকেজিং ব্যবস্থা উন্নত করা, মার্কেট নিয়ন্ত্রণ কার্যকর উপায় হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ‘স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিতে বিদ্যমান আইন, নীতিমালা: প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন। সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ার্স-সিএলপিএ, আর্ক ফাউন্ডেশন, পাবলিক হেলথ ল নেটওয়ার্ক, সিটিজেন নেটওয়ার্ক- এর যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর গুলশান-২ এর হোটেল বেঙ্গল ব্লবেরিতে।

বক্তারা বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ট্রান্স ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা তৈরি করেছে, বিভ্রান্তকর বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণে ভোক্তাদের সচেতন করা জরুরি, যা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি বাসায় স্বাস্থ্যকর খাদ্যের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

সভায় ব্যবসার লাইসেন্স নেয়ার সময় নিরাপদ খাদ্য আইন অনুসারে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বিষয়ে সচেতনতার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়। এছাড়া স্টিট ফুড বা হোটেলে যারা খাদ্য উৎপাদন করছে, তাদের নিরাপদ খাদ্যের উৎপাদন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্যকে আমাদের আরো ব্যাপকভাবে চিন্তা করতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ পুষ্টিকর খাদ্য বিষয়ে সচেতন করছে, কৃষি বিভাগ উৎপাদন করছে, আর এসকল পুষ্টিকর খাদ্য কম খরচে নিয়ে আসার জন্য রেল ও নৌ মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি বিভাগের এ ধরনের সমন্বিত উদ্যোগে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নয়ন করা সম্ভব।

আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৬, ১৮, ৩৭, ৪৩ এ জনস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়নে জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার পায় না। সকল নীতিতে স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। স্বাস্থ্যের সাথে যে সকল নীতি সাংঘর্ষিক হবে ,তা বাতিল হবে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার না করা হলে দেশের হাসপাতালের উপর চাপ কামানো সম্ভব হবে না।

সভায় অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের ওপর কর বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যের উপর কর হ্রাসের উদ্যোগ নেয়া, প্যাকেজিং ও লেবেলিং আরো শক্তিশালী করা, সেই সাথে শিশুদের কাছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এছাড়া সকল প্যাকেটে অতিরিক্ত লবণ ও চিনি আছে, তাতে রং বা বিশেষ চিহ্ন ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ সহজে বুঝতে পারে। পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব প্যাকেজিং এবং লেবেলিং করার বিধান যুক্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এর প্রকল্প পরিচালক এবং সদস্য (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) এর মনজুর মোরশেদ আহমেদ, ভাইটাল স্ট্রেটেজিস এর জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মো: ফহিমুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং আর্ক ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. রুমানা হক। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর প্রকল্প পরিচালক ড. এ কে এম শামীম আলম, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি এর নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদসহ বাংলাদেশে ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্স-বিইউএইচএস, জাইকা, বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সাইন্টিফিক এবং ইনডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ-বিসিএইচআইআর, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-ডিআইইউ, আইন মন্ত্রণালয়, ওয়ার্ড ব্যাংক গ্রুপ এবং গেইন, আর্টিকেল ১৯, সাভার মিউনিসিপিলটি, ইউআরবি বাংলাদেশ এর প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *