সারাদেশ

দ্বিতীয় দিনের মতো বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা

ডেস্ক রিপোর্ট: দ্বিতীয় দিনের মতো বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা

ফাইল ছবি

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা শীর্ষে। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ৮টার দিকে বিশ্বের ১০৯ শহরের মধ্যে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ২৬৪ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হয়ে পড়েছে।

এ স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলে ধরা হয়। গতকাল সোমবার খ্রিষ্টীয় নতুন বছর ২০২৪ সালের প্রথম দিনে দূষণে শীর্ষ অবস্থান নিয়ে ঢাকার স্কোর ছিল ২৪৬। এ স্কোরও খুব অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।

বিশ্বে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে ভারতেরই দুই শহর কলকাতা ও দিল্লি। এ দুই শহরের স্কোর যথাক্রমে ২৫০ ও ২০৬।

বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।

আইকিউএয়ারের দেওয়া আজকের তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) দূষণের প্রধান উৎস। আজ ঢাকার বাতাসে যতটা এই বস্তুকণা আছে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে ৪১ গুণের বেশি। বাতাসের এ অবস্থা থাকায় সবার জন্য পরামর্শ, আজ বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

বায়ুদূষণ বেশি হলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন সংবেদনশীল গোষ্ঠীর ব্যক্তিরা। তাঁদের মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও জটিল রোগে ভোগা ব্যক্তিরা। তাঁদের বিষয়ে বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।

স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়। ঢাকায় গত জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দিন দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের মধ্যে কাটিয়েছে নগরবাসী। জানুয়ারির মোট ৯ দিন রাজধানীর বাতাসের মান দুর্যোগপূর্ণ ছিল, যা গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আসন-সীমানা ফাঁদে উন্নয়ন বঞ্চিত মাগুরার ৪ ইউনিয়ন

ছবি: বার্তা২৪.কম

মাগুরা থেকে: দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার কৃষি নির্ভর জেলা মাগুরা। এ জেলার ৪টি উপজেলা মিলে দুইটি সংসদীয় আসন গঠিত। জেলার শ্রীপুর ও মাগুরা সদর নিয়ে ১ আসন গঠিত হলেও এই আসনের আওতায় আসেনি সদর উপজেলার শত্রুজিৎপুর, গোপালগ্রাম, কুচিয়ামোড়া, বেরইল পলিতা ইউনিয়ন।

মাগুরা সদরের ইউনিয়ন হয়ে সংসদীয় আসন-২ এর এরিয়ায় পড়ায় কপাল পুড়েছে এসব ইউনিয়নের মানুষের। দীর্ঘ সময় এই আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য থাকলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এসব এলাকায়। ভঙ্গুর দশা রাস্তাঘাট, ও গ্রামীণ অবকাঠামোর।

স্থানীয়রা জানান, দুই আসনের আওতায় হওয়ায় জেলার সদরের কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন মুলক কাজের আওতায় আসেনা সদর উপজেলার ৪ ইউনিয়ন। এদিকে জেলার সদর কর্তৃপক্ষের অপেক্ষায় কাজ করে না সংসদ সদস্যও। ফলে দীর্ঘ সময় উন্নয়ন বঞ্চিত চার ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ মানুষ।

সরজমিন ইউনিয়নগুলো ঘুরে দেখ গেছে, কাচা রাস্তাগুলোর বেহাল দশা। ইটের সলিং রাস্তাগুলো হয়ে পড়েছে চলাচলের অনুপযোগী। এছাড়া গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এসব ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পুকুরপাড় বাঁধসহ ইউ টার্নও। শুষ্ক মৌসুমে কিছুটা চলাচল করা গেলেও বর্ষাকালে একদমই চলা যায় না ইউনিয়নগুলোর বেশ কিছু সড়ক দিয়ে। ফলে দিনের পর দিন দুর্বিষহ কষ্টে দিন পার করছে এসব এলাকার মানুষ। ফলে আসন জটিলতার নিরসন করে এলাকার রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের তাগিদ সকলের।

ছবি: বার্তা২৪.কম বিরল পলিতা ইউনিয়নের মমিনুর রহমান বলেন, এমপিরা ভোট নিতে আসে কথা দেয় আর চলে যায়। কথা কেউ রাখে না। আমরা মাগুরার হয়ে মোহাম্মদপুরের এমপির আওতায় আছি। এ জন্য আমাদের কোনো উন্নয়ন হয় না। আমাদের কপাল খারাপ।

শত্রুজিৎপুর ইউনিয়নের সোলেমান আলী বলেন, আমাদের ইউনিয়নসহ অন্য আরও বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন যাওয়ার প্রধান সড়ক নরাইল মাগুরা সড়ক, যেটার অবস্থা একদমই খারাপ। কেউ কাজ করে না এটাতে। এলাকার রাস্তাগুলোতে তো চলাচল করা মুশকিল। সব মিলে আমরাসহ আরও ৩ টা ইউনিয়নের মানুষ বঞ্চিত।

শরীফ নামের আরেকজন বলেন, আসন এরিয়া জটিলতায় কপাল পুড়ছে আমাদের। আমরা চাই আমাদের মাগুরা সদরের আওতায় নিয়ে, এলাকার উন্নয়ন করুক। অথবা যেই এমপি হোক যেন ভালোভাবে এলাকার কাজ করে এটাই চাওয়া।

ছবি: বার্তা২৪.কম বেরইল পলিতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এম এনামুল হক রাজা বলেন, এমপি এলাকায় কোনো কাজ করতে চান না। আমার ইউনিয়নের রাস্তা ঘাটের অবস্থা অনেক খারাপ। অনেক চেষ্টা করেও বরাদ্দ অনুদান মেলাতে পারি না৷ আমাদের চলাচলের প্রধান সড়ক নড়াইল মাগুরা সড়কের ৭-৮ কিলোমিটার রাস্তা একদম চলাচলের অনুপযোগী। আসন জটিলতা একটা বড় কারণ এখানে।

ছবি: বার্তা২৪.কম এ বিষয়ে মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরেন শিকদারের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে মাগুরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আ.ন.ম. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ৪ ইউনিয়নের বেশ কিছু রাস্তা প্রজেক্টের আওতায় আছে। বরাদ্দ আসলে এসব এলাকায় রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করা হবে। ইতিমধ্যে একটি বড় বরাদ্দ আছে সেই বরাদ্দের আওতায় নেশ কথা কিছু কাজের প্রস্তুতি চলছে।

;

কুষ্টিয়ায় এমপির বাড়ির সামনে বোমা নিক্ষেপ

এমপির বাড়ির সামনে বোমা নিক্ষেপ

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন (কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা) সংসদ সদস্য সৈয়দা রাশিদা বেগমের কুষ্টিয়ার মিরপুরের বাড়ির সামনের মার্কেটের ছাদে হাতবোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা।

সোমবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মিরপুর নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সৈয়দা রাশিদা বেগমের কুষ্টিয়ার মিরপুর নতুন বাজার এলাকায় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির সামনের মার্কেটের ছাদে হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এঘটনায় বিকট আওয়াজে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাবিবউল্লাহ এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমরা পরিদর্শন করেছি। কী কারণে এ হামলা এটি এখনো জানা যায়নি। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে। ’

;

আন্তর্জাতিক ৬ রুটে পাখা মেলছে নভোএয়ার

৬টি আন্তর্জাতিক রুটে পাখা মেলছে নভোএয়ার

এ বছরের প্রথমার্ধ থেকে আন্তর্জাতিক রুট সম্প্রসারণে যাচ্ছে বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ার। নভোএয়ার ৬টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। এ লক্ষ্যে তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও শুরু করেছে।

এরই অংশ হিসেবে নতুন উড়োজাহাজ কেনা, পরিকল্পনায় থাকা আন্তর্জাতিক রুটগুলোর মার্কেট স্টাডি করাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে এয়ারলাইন্সটি।

নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিসরে যাত্রী সেবার পরিধি বাড়ানোর অংশ হিসেবে আমরা মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই দিকে রুট সম্প্রসারণে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, বছরব্যাপী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটে পাখা মেলবে নভোএয়ার। সারা বছর ধরেই নভোএয়ার একে একে ৬টি রুটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর কাজ চলবে।

জানা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর ও কুয়ালালামপুর এবং মধ্যপ্রাচ্যের শারজা, দুবাই ও মাস্কাটে ফ্লাইটগুলো চালু করা হবে।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করতে নভোএয়ার তিনটি এয়ারবাস ৩২১ উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত করছে। এর মধ্যে দুটি উড়োজাহাজ অতি সত্বর হাতে আসছে। এছাড়া বহরে থাকা ৭টি এটিআর৭২ উড়োজাহাজ তো রয়েছে।

মফিজুর রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ রুটসমূহে যাত্রী সংখ্যা অনেক কমেছে। শুধু বরিশাল, যশোরই নয়, অন্যান্য গন্তব্যে যাত্রী সংখ্যা কমেছে। গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় এই বছরের ডিসেম্বরে যাত্রী সংখ্যা কমেছে ৫৬ হাজার। যাত্রী কমার মূলে রয়েছে দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আকাশপথের ভাড়া কারণে।

নভোএয়ারের প্রধান বেসরকারি এয়ারলাইন্সকে বাঁচাতে আবারো সরকারের প্রতি আকাশপথে ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। নতুবা আকাশপথের এই বাজারটি পুরোপুরি বিদেশিদের হাতে চলে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী ভারতের সরকারও দেশীয় এয়ারলাইন্সসমূহকে সক্ষম করতে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকে, যাতে করে আকাশপথে বাজারে স্থানীয় এয়ারলাইন্সগুলোর আধিপত্য বজায় থাকে। বাংলাদেশেও ওই ধরনের সহায়তা দিলে দেশীয় এয়ারলাইন্স দেশের অর্থনীতিতে আরো বেশি অবদান রাখতে পারবে।

নভোএয়ার বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটসমূহ ছাড়া ঢাকা-কলকাতা রুটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এয়ারলাইন্সটি ২০১৩ সালে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।

;

শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে ছাপিয়ে বই উৎসবে তাহসিন

শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে ছাপিয়ে বই উৎসবে তাহসিন

মানসিক শক্তির সামনে যে শারীরিক কোন প্রতিবন্ধকতাকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তা-ই যেন প্রমাণ করে দেখাল চট্টগ্রামের ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী কাজী তাহসিন। হুইল চেয়ারে চড়ে বছরের প্রথম দিনে নতুন পাঠ্য বইয়ের ঘ্রাণ নিতে বোনের সঙ্গে বিদ্যালয়ে এসেছিল সে।

নতুন বই পেয়ে অদম্য তাহসিনের চেহারায় আনন্দের ঝলকানি। সহপাঠীদের সঙ্গে নতুন বই নিয়ে আলোচনায় মেতে উঠেছিল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এই শিক্ষার্থী। হুইল চেয়ারে বসে বিজয়ের হাসিতে যেন জানান দিচ্ছিল প্রবল ইচ্ছাশক্তির কথা। সবুজ ফিতায় বাধা সবকটি নতুন বই কোলে ধরে যেন বলছিল-ইচ্ছা শক্তিই সব। প্রবল মনোবল থাকলে জয় করা যায় যেকোন বাধা।

আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে জন্মগ্রহণ করে তাহসিন। তবে সে অন্য দশটা শিশুর মতো সুস্থ শরীর পায়নি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে বাধা ছিল প্রতি পদে পদে। কিন্তু প্রবল ইচ্ছার পথে কাঁটা হতে দাঁড়াতে পারেনি সেই সব বাধা। বাধার সব পাহাড় ডিঙিয়ে তাহসিন এখন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। লটারির ভাগ্যে সে সুযোগ পেয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর অন্যতম প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র-ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এর আগে সে অষ্টম শ্রেণির পাঠ শেষ করে নগরের সাউথ পয়েন্ট নামের একটি বেসরকারি বিদ্যালয় থেকে।

দুই পায়ের অস্বাভাবিকত্বের কারণে হাঁটাচলা করতে পারে না তাহসিন। তবে তার সেই মন্থর জীবনে গতি এনে দিয়েছে ব্যটারিচালিত স্মার্ট হুইল চেয়ার। এই চেয়ারই এখন তার নিত্যসঙ্গী। বড় বোন কাজী তানিজনা হুইল চেয়ারে করে বোনকে নিয়ে এসেছিলেন বিদ্যালয়ে। নতুন বই নিয়ে ছোট বোনের উচ্ছ্বাস দেখে খুশিতে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি বড় বোনও।

সেই আবেগ সামলে কাজী তানজিনা বলেন, আমার বোন খুবই মেধাবী। আল্লাহ ওকে শারীরিকভাবে আমাদের মতো করে পাঠাননি, কিন্তু মেধার কমতি দেননি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সাউথ পয়েন্ট স্কুলে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ালেখা করেছে সে। এবার খাস্তগীর স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এটা তার জন্য আরেকটা বড় পাওয়া। আশা করছি সে সামনের দিনগুলোতে স্কুলের নাম উজ্জ্বল করবে।

রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামের বাসিন্দা কাজী মোহাম্মদ ইমরানের তিন মেয়ের মধ্যে তাহসিন সবার ছোট। ব্যবসায়ী ইমরান স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নগরীর জুবিলী রোডে বসবাস করেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করলেও অন্যদের চেয়ে মেধায় পিছিয়ে নেই তাহসিন।

তাই তাহসিনের পড়ালেখায়ও কমতি রাখেননি বাবা কাজী মোহাম্মদ ইমরান। তিনি বলেন, ছোটকাল থেকেই পড়ালেখার প্রতি তাহসিনের ছিল অদম্য ইচ্ছে। আমরাও তাই ওর জন্য সবরকম ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। কয়েকদিন আগে ভর্তির বিষয়ে ওর স্কুলে গিয়েছিলাম। তখন শিক্ষকরা ওকে বলেছিল, বিদ্যালয়ে বই উৎসব হবে। তুমি আসবে। সেই থেকে তাহসিন আজকের দিনটির কথা মনে করে ছিল। তাই যত কষ্টই হোক নিয়ে আসতেই হলো।

মেয়ের নতুন বই ছোঁয়ার আনন্দ দেখে উচ্ছ্বসিত বাবা কাজী মোহাম্মদ ইমরান। তিনি বলেন, নতুন বই পাওয়ার পর ওর যে আনন্দ তাতে মনে হচ্ছে কষ্ট করে ওকে এই উৎসবে নিয়ে আসা সার্থক হয়েছে। হুইল চেয়ারে বসে তাহসিন এক হাতে বুকে জড়িয়ে রেখেছে নতুন সবকটি বই। অন্য হাতে জানান দিচ্ছে স্বপ্নের কথা।

নতুন বই পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তাহসিন। নতুন বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে তাহসিন মৃদু স্বরে বলে, নতুন বই পেয়েছি। খুবই ভাল লাগছে। সরকারকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের নতুন বই উপহার দেওয়ার জন্য। পড়ালেখা করে অনেক দূর যাওয়ার ইচ্ছা আমার। তাই স্বপ্ন পূরণে সকলের দোয়া ও ভালোবাসা চাই।

ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাহেদা বলেন, আজকের বই উৎসবে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়েও তাহসিন যেন বঞ্চিত না হয় সেজন্যই ওকে আমরা বিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছি। তার আগ্রহ দেখে আমরা অভিভূত। ওর ইচ্ছা শক্তি প্রবল। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার কাছে কোন বাধাই না।

;

সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *