বাংলাদেশ ইকোনমিস্টস ফর ইফেক্টিভ টোব্যাকো কন্ট্রোল’র যাত্রা শুরু
ডেস্ক রিপোর্ট: `মামা কোরবানির ঈদ তো গেছে অনেক দিন। ঈদের সময় ছাগলের গোস্ত, গরুর গোস্ত (মাংস) পেয়েছিলাম তাই কয়দিন ধরে খেয়েছিলাম। তারপর থেকে আজও খাইনি। মাঝে মধ্যে পোল্ট্রি কিনতাম। মাছের থেকে তো পোল্ট্রির দাম কম ছিল। কিন্তু দাম বাড়ার পর থেকে পোল্ট্রিও কিনতে পারি নে। কয়দিন আগে পোলায় গোস্ত খাইতে চাইছিল, তখন বাজার থেকে কম দামে পা-মাথা-গলা এগুলো কিনেছিলাম। কি আর করার বলেন মামা। সারাদিন রিকশা চালিয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কামাই করি। এর থেকে আবার গ্যাজের মালিকের টাকা দিতে হয় বাজার করতে হয় আরও কত খরচ। গরিব মাইনষে কি চাইলেই সব কিনতে পারে কন মামা।’
এভাবেই নিজের কষ্টের কথা বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদককে বলেছিলেন তালতলা এলাকার রিকশাচালক শহীদ মোল্লা।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর শ্যামলী থেকে আগারগাঁও বিএনপি বাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে গল্পের ছলে প্রশ্ন করতেই তিনি এসব কথা বলেন। তবে এদিন রাজধানীর আগারগাঁও বিএনপি বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের বাজারে উর্ধ্বমূল্যে ক্রেতাদের অসন্তোষের চিত্র দেখা গেছে। সেই সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির দামে ডাবল সেঞ্চুরি অর্থাৎ ২০০টাকার বেশি দামে বিক্রি করতেও দেখা যায়।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লেয়ার মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ এবং সোনালি মুরগির কেজি ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে মুরগির দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে জানেন না বিক্রেতারা। তারা বলেন, গরমের সময় স্ট্রোক করে মুরগি মারা যাওয়ার কারণে দাম বাড়তো কিন্তু এখন হঠাৎ করে কেনো দাম বাড়ছে সেটা বলতে পারব না।
ছবি: বার্তা২৪.কম এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজির ভরপুর আনাগোনা থাকলেও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে এসব পণ্য। মঙ্গলবারের (৯ জানুয়ারি) তুলনায় দাম কমেনি কোনো পণ্যের।
বাজারে ফুল কপি বড় ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিচ, বাঁধা কপি ৪০ টাকা, গাজর ৬০ থেকে ৮০টাকা, লাউ ৮০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, গোল বেগুনের কেজি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৫০ টাকা, করোলা ১০০ টাকা, পেপে ৬০টাকা, মুলা ৫০ টাকা, ভেন্ডি ৮০ টাকা, সিম ৮০ থেকে ১০০টাকা, পটল ৮০ টাকা, টমাটো ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, শসা ৬০(হাইব্রিড), মরিচ ১২০ টাকা, কাচকলার হালি ৩০ টাকা, পিঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা, পিঁয়াজের কালি ৬০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চায়না রসুন বড় ২২০, দেশি রসুন ২৫০ টাকা, আদা ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির মৌসুমে সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ জানাচ্ছেন অধিকাংশ ক্রেতা।
ক্রেতা সাইদুল বলেন, যতই আমদানি বেশি হোক একবার দাম বেড়েছে আর কমবে না। আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম একবার বাড়লে আর কমে না। তাই কিছু বলেও লাভ নেই।
ছবি: বার্তা২৪.কম বিল্লাল হোসেন বলেন, দিন দিন সব কিছুর দাম বাড়তেই আছে। দেখার কেউ নেই। কে খেতে পারলো আর কে না পারলো সেটা কারোর দেখার সময় আছে। বড়লোকরা তো আমাদের মতন মধ্যবিত্ত গরিবের কষ্ট বুঝবে না। এই দেশ গরিবের জন্য না।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৮ টাকা কেজি দরে, আঠাঁশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। প্যাকেট পোলাওর চাল ১৬০ টাকা কেজি, খোলা পোলাওর চাল ১৪০টাকা কেজি, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, বাসমতি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছের বাজার ঘুরে বিগত সপ্তাহের তুলনায় দামের খুব একটা পার্থক্য চোখে পরেনি। বাজারে দেখা গেছে, বড় সাইজের রুই মাছ ৪০০ থেকে ৫৫০, ছোট সাইজের রুই ২২০ থেকে ৩০০, কই মাছ ২৫০ থেকে ৩০০, পাপদা ৪৫০, টেংরা ছোট ৫০০, বড় ৭০০, চিংড়ি ছোট ৬০০ মাঝারি ৭০০ টাকা কেজি, শিং ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।
মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খাসির মাংস কেজি ১১০০ টাকা, গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা দরে, সাদা ডিমের ডজন ১২০, হাঁসের ডিমের ডজন ২০০, দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সংবাদটি প্রথম প্রকাশিত হয় বার্তা ২৪-এ।